ভারতের তথাকথিত ধর্ম সংসদে মুসলিম নেতাদের গ্রেফতার চায় হিন্দু সেনারা

আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২
0

দিল্লি ও হরিদ্বারে তথাকথিত ধর্ম সংসদে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ নিয়ে তোলপাড় দেশ। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর গ্রেফতার হয়েছেন যাতি নরসিংহানন্দ ও জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগী (ধর্মান্তরণের আগের নাম ওয়াসিম রিজভি)। এ বার এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ল আবেদন। দু’টি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ওই আবেদনের নির্যাস, ঘৃণা-ভাষণের জন্য গ্রেফতার করা হোক মুসলিম নেতাদেরই। সংশ্লিষ্ট মামলায় তাদের যুক্ত করারও আবেদন জানিয়েছে দুই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

‘হিন্দু সেনা’ নামে সংগঠনটির তরফে শীর্ষ আদালতে জমা পড়া আবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘ধর্ম সংসদে ধর্মীয় নেতাদের ওই বক্তব্যের কারণ হিন্দু সংস্কৃতির উপর অ-হিন্দুদের আক্রমণ। একে কোনও ভাবেই ঘৃণা-ভাষণ হিসেবে অভিহিত করা যায় না।’

আবেদনে বলা হয়েছে, ‘হিন্দুদের আধ্যাত্মিক নেতাদের কলঙ্কিত করার প্রয়াস চলছে… আবেদনকারী এক জন মুসলিম ধর্মাবলম্বী এবং তিনি হিন্দু ধর্ম সংসদ নিয়ে আপত্তি জানাতে পারেন না।’ প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি দায়ের করেছেন পটনা হাই কোর্টে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশ এবং সাংবাদিক কুরবান আলি।

‘হিন্দু সেনা’ নামক সংগঠনটির সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত আরও দাবি জানিয়েছেন, এআইএমআইএম-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি এবং ওয়ারিস পঠানের মতো মুসলিম নেতাদের আগে গ্রেফতার করা হোক। তাঁর দাবি, ওয়েইসি, পঠানরাও ঘৃণা-ভাষণ দেওয়ায় অভিযুক্ত।

‘হিন্দু ফ্রন্ট ফর জাস্টিস’ নামে অন্য একটি সংগঠন আবেদনে দাবি করেছে, সুপ্রিম কোর্ট যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-ভাষণের মামলাটি বিবেচনাধীন রেখেছে তখন হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-ভাষণের বিষয়টিকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হোক। হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-ভাষণের ২৫টি দৃষ্টান্তও তারা আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করেছে।

সম্প্রতি দিল্লি ও হরিদ্বারে তথাকথিত ধর্ম সংসদে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কতিপয় হিন্দুত্ববাদীর বিরুদ্ধে। একে জাতীয় সুরক্ষা ও দেশের অখণ্ডতার পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে পাঁচ প্রাক্তন সেনা অধিকর্তা এবং বহু সাধারণ মানুষ। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন আমলারাও। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিয়েছেন তাঁরা।

গত ১২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র, দিল্লি পুলিশ ও উত্তরাখণ্ড সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে এ বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ করা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চায়।

ঠিক তার পরেই উত্তরাখণ্ডের পুলিশ গ্রেফতার করে যাতি নরসিংহানন্দ ও ও জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগী (ধর্মান্তরণের আগের নাম ওয়াসিম রিজভি)-কে। বর্তমানে তাঁরা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার