ভারত-পাকিস্তান পারেনি, পেরেছে আফগানিস্তান

আপডেট: জুলাই ৯, ২০২৩
0

তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন এই দলটাকে বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল। দলটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেও শুরু করেছিল সমর্থকরা। তবে সেই স্বপ্নে যেন পানি ঢেলে দিলো আফগানিস্তান। এক ম্যাচ হাতে রেখে বাংলাদেশের মাটিতেই বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়ে দিলো তারা!

গত ৮ বছরে ইংল্যান্ডের পর এই প্রথম কোনো দলের কাছে দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। ২০১৫ সাল থেকে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, উইন্ডিজের মতো শক্তিশালী দলগুলো যা করতে পারেনি তাই করে দেখালো আফগানিস্তান।

যেখানে শুধু বাংলাদেশের ব্যর্থতাই নয়, আছে আফগানিস্তানের সাফল্যগাঁথাও। প্রতিনিয়ত নিজেদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে তারা, এগিয়ে যাচ্ছে সমীহ জাগানিয়া দল হওয়ার পথে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে একটুখানি আনন্দের উৎস তাদের ক্রিকেট, ক্রিকেটটাকে তাই তারা ধারণ করে হৃদয় থেকে। তাই প্রতিপক্ষের সামনে চোখ রাঙানি দিতে নিজেদের লড়াই চলছে তাদের অনবরত।

মাসখানেক আগেও যেই দলটা টেস্টে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশের কাছে, হেরেছে রেকর্ড ব্যবধানে। সেই দলটাই ওয়ানডেতে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশকেও। এক ম্যাচ হাতে রেখে শুধু সিরিজ জয় নিশ্চিত করেনি, দুই ম্যাচেই টাইগারদের রীতিমতো আত্মসমর্পণ করিয়েছে তারা।

এটা এমনি এমনিই হয়নি। এই লক্ষ্য নিয়েই আবুধাবিতে বিশেষ ক্যাম্প করে অনুশীলন করেছে রশিদ-নবীরা। ওয়ানডে সিরিজের আগে পূর্ণপ্রস্তুত হয়েই বাংলাদেশে এসেছে তারা। নিজেদের দূর্বলতা ডেকে নিয়েছে, বাংলাদেশের দূর্বলতা খুঁজে নিয়েছে। এমনকি সারাবিশ্ব যখন ঈদ পালনে ব্যস্ত, তখনো তারা ঈদের ছুটি নেয়নি, অনুশীলন করে গেছে অনবরত।

গতকাল শনিবার ম্যাচ শেষে আফগান অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদীর মুখেই শোনা গেল তাদের ত্যাগের কথা। বললেন ঈদের আনন্দ তারা খুঁজে নিয়েছেন বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়ে। এখন তারা বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতেও আশাবাদী।

পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে শাহিদী বলেন, ‘এই সিরিজের জন্য আমরা ঈদ বিসর্জন দিয়েছি। আবুধাবিতে ছিলাম, ১৪ দিন কঠোর পরিশ্রম করেছি। গত সিরিজে যে জিনিসগুলো ভালোভাবে করতে পারিনি, সেসব নিয়ে কাজ করেছি আমরা। তার ফল পেয়েছি। খুবই খুশি যে আমরা সিরিজটি জিততে পেরেছি। দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে গোটা দল।’

আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপেও দল নিয়ে বেশ আশাবাদী আফগানিস্তান অধিনায়ক। ‘দুই বছর ধরে এই দলটাকে গড়ে তুলছি। কাজ করে চলেছি। প্রতিটি সিরিজে ম্যাচ ধরে ধরে উন্নতি করছি। এখন ফল পেতে শুরু করেছি। ইনশা আল্লাহ আগামী এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের ফলাফল আগের চেয়ে ভিন্ন হবে। দলের ওপর আমার বিশ্বাস আছে অনেক। আশা করি আমরা লক্ষ্য পূরণ করতে পারব।’

বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপ নয়, আফগানিস্তানের প্রাথমিক লক্ষ্য সিরিজটি ৩-০ করা। আফগান কোচ জোনাথন ট্রট বললেন সে কথাই। সেই সাথে কাঁটা গায়ে যেন নুনের ছিটাও দিলেন তিনি। বললেন, ‘ওরা কত দিন জানি ঘরের মাঠে সিরিজ হারে না? আট বছর? ভালো লাগছে যে ইংল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের এখানে একটা মিল আছে। আমরা এখন ৩-০ ব্যবধানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’