ভূরুঙ্গামারীতে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে প্রতারনার অভিযোগ এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২৩
0

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষক ও কাজীর (নিকাহ রেজিষ্টার) বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই কাজীর নাম মাহমুদুল হাসান খোকন। অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুল হাসান খোকন বিবাহিত ও উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বরকতিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ‍্যালয়ে ইসলাম ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক ও নিকাহ রেজিষ্টার। সে একই ইউনিয়নের কাজী আব্দুল মান্নানের ছেলে।
বিয়ে করে এক বছর সংসার করার পর প্রতারনা করায় নিরুপায় হয়ে অভিযুক্ত ব‍্যক্তির কর্মস্থলের প্রধান শিক্ষক, বিদ‍্যালয়ের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে আরজিনা খাতুন নামের ভুক্তভোগী এক নারী। আরজিনা খাতুন উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ মার্চ পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দিন এর মেয়ে আরজিনা খাতুন (৩২) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান কাজির ছেলে মাহমুদুল হাসান খোকন (৩৮) উভয়ের সম্মতিতে ঢাকায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অভিযুক্ত ব‍্যক্তি বিবাহিত এবং পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ও নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী)।আরজিনা খাতুন ও মাহমুদুল হাসান দীর্ঘ এক বছর তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করে। গত ১২ জানুয়ারি অভিযুক্ত খোকন আরজিনার বাড়িতে আসলে আরজিনা তাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এবং বিবাহের কাবিন নামার নকল চায়। তখন সে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলে। এর পর ২২/১/২৩ ইং তারিখে আরজিনা স্ত্রীর অধিকার চাইতে গেলে সে বিয়ের কথা অস্বীকার করে। পরে গোপনে একটি তালাকনামা ভূক্তভোগীর ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়।
গত ২৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বিকেলে উপজেলার পাটেশ্বরী বাজারে ভূক্তভোগী নারীর সাথে খোকন কাজির দেখা হলে ওই নারী তার পথ রোধ করে এর একটি সুষ্ঠু সমাধান চায়। সেসময় বাজারের লোকজন জড়ো হলে ওই কাজী খোকন কৌশলে ভীড় ঠেলে তার নিজ বাড়িতে চলে যায়।
ভুক্তভোগী নারী আরজিনা খাতুন বলেন, অনেক দিন থেকেই সে (খোকন) আমাকে বিভিন্ন ভাবে উত্ত‍্যক্ত করতো। তার উত্ত‍্যক্ত সহ‍্য করতে না পেরে আমি ঢাকায় চলে যাই। সে সেখানে গিয়ে আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা কাবিন নামায় তোলার কথা বলে আমাকে বিবাহ করে। এক বছরে প্রায় প্রতি মাসে ঢাকায় আমার বাসায় আসতো। আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতাম। আমি গার্মেন্টস এ চাকরি করে যে টাকা জমিয়ে ছিলাম সেখান থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে খোকন আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে আমি বাড়িতে এসে বৌ হিসেবে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে বলায় আমাদের বিয়ের কথা অস্বীকার করে। পরে আমার ঠিকানায় একটি তালাক নামা পাঠায়। আমি এই তালাক মানিনা বললে সে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান খোকন এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযুক্ত কাজী মাহমাদুল হাসান খোকনের বাবা আব্দুল মান্নান কাজী তার ছেলে খোকন ও আরজিনার বিয়ের সত‍্যতা স্বীকার করে বলেন ওই মেয়েকে আমার ছেলে তালাক দিয়েছে। পরে ওই মেয়ে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে স্হানীয়ভাবে মিমাংশার চেষ্টা করা হলেও স্হানীয় মাতাব্বরদের কারনে আপোষ করা সম্ভব হয়নি।
ওই কাজীর কর্মরত বিদ‍্যালয় পাটেশ্বরী বরকতিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন,এবিষয়ে আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং বিদ‍্যালয়ের সভাপতির সাথে কথাও বলেছি। কিন্তুু কিছু সমস‍্যার করনে অভিযোগটি নিস্পত্তি করা সম্ভব হয়নি।
পাইকেরছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর একাধিকবার মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু কাজি (খোকন) সাহেব সাড়া না দেওয়ায় কোন সুরাহা করা সম্ভব হয় নাই।
##
২৬.০৪.২০২৩