মধ্যপ্রদেশে মুসলমানদের দোকান থেকে কেনাকাটা না করার শপথ !

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২২
0

ভারতের বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশের খারগোনে দাঙ্গার পর মানুষের মধ্যে শত্রুতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন শহর থেকে গ্রামেও তা পৌঁছে গেছে। জেলার অনেক গ্রামে হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা প্রকাশ্যে লোকদের শপথ প্রদান করাচ্ছেন।

তাদেরকে বিধর্মীদের (অহিন্দু) দোকান থেকে কাপড়, চপ্পল বা অন্য কোনো জিনিস না কেনার শপথ করানো হচ্ছে। খারগোনের এসপি রোহিত কাসওয়ানি বলেছেন, এই ধরণের ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। ভিডিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

আজ (সোমবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘দৈনিক ভাস্কর’সূত্রে প্রকাশ, জেলার উবদী, পিপরি ও ইচ্ছাপুর গ্রামেও ইতোমধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। একইসময়ে, বিস্তান এবং কেলিতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শপথ গ্রহণ করানোর ভিডিওও ভাইরাল হচ্ছে। এর পাশাপাশি হাট-বাজারেও অর্থনৈতিক বয়কটের কথা উঠে আসছে।

শপথে বলা হচ্ছে ‘আজ থেকে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, আমরা বিধর্মীদের দোকান থেকে কাপড়, চপ্পল বা অন্য কোনো জিনিস কিনব না, এবং তাদের কাছে আমাদের কোনো জিনিস বিক্রি করব না। হে মহাকাল, আমাদের সংকল্প পূর্ণ করার জন্য আমাদের সঠিক শক্তি এবং মনোভাব দান করুন।’

প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল রাম নবমীর দাঙ্গায় শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় ক্ষতি হয়েছিল। এতে জনগণের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে মানুষ নিজ নিজ স্তরে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, সম্প্রতি বিজেপিশাসিত মধ্য প্রদেশ ও গুজরাটে মুসলমানদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং ধর্মীয় স্থানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। মধ্য প্রদেশের খারগোন শহর সহিংসতার কেন্দ্রস্থল, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন মুসলমানদের বাড়িঘর এবং দোকানগুলো ভেঙে দিয়েছে।

সম্প্রতি জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানী তীব্র আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করে খারগোনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সমাজবিরোধীদের মাধ্যমে অনেক বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, সহিংসতা শুরু হওয়ার পর এখন স্থানীয় প্রশাসন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হয়রানি করতে উদ্যত। মুসলিমদের সম্পত্তি ও তাদের বাড়িঘর চিহ্নিত করে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। এসবের মধ্যে হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে জনগণকে অহিন্দুদের দোকান থেকে কেনাকাটা না করার জন্য শপথ প্রদানের খবর প্রকাশ্যে এলো।