মধ্যরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে হেফাজত নেতাদের স্বাক্ষাৎ:ঢালাও গ্রেফতার বন্ধ ও মাদ্রাসা খুলে দেয়ার দাবী

আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২১
0

বিবিসি:
বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা-ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামির একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে সাক্ষাৎ করে ‘ঢালাও গ্রেফতার’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।ওই সাক্ষাতে অংশ নেয়া একজন হেফাজত নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে একথা জানিয়েছেন।

সংগঠনটির মহাসচিব নূরুল ইসলাম জেহাদীর নেতৃত্বে এ প্রতিনিধিদলে সদ্য আটক হওয়া হেফাজত নেতা মামুনুল হকের ভাই মাহফুজুল হকও ছিলেন।

রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের আগে দিনের বেলায় সংগঠনটির নেতারা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সাথেও বৈঠক করেছেন।

যদিও কোন পক্ষ থেকেই বৈঠকগুলোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য আসেনি। তবে নূরুল ইসলাম জেহাদী সোমবার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে তারা গ্রেপ্তারকৃতদের জন্য আইনি লড়াই চালাবেন এবং একইসাথে তারা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে যা বলেছে হেফাজত

ওই বৈঠকের পর প্রতিনিধি দলটির একাধিক সদস্য নিশ্চিত করেছেন যে তাদের আলোচনায় মূলত তিনটি বিষয়টি এসেছে: ঢালাও গ্রেফতার বন্ধ, সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ঘটনাগুলোর তদন্ত এবং কওমি মাদ্রাসা খুলে দেয়া।

তারা গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তিও দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে হেফাজতের ইসলামির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।গত ২৬শে মার্চ থেকে তিন দিন ধরে হেফাজতের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং হাটহাজারীসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক সহিংসতা হয়, সেই সহিংসতার ঘটনাগুলোর ব্যাপারে একশোটির মতো মামলা রয়েছে।

এছাড়াও ২০১৩ সালে হেফাজতের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে যে সহিংসতা হয়েছিল, সেই মামলাগুলোও এখন তাদের কয়েকজন নেতাকে আটক দেখানো হয়েছে।সোমবার মধ্যরাতের বৈঠকে হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন যে, ‘এভাবে ঢালাও গ্রেফতারের কারণে ভুল বোঝাবুঝির’ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের জানিয়েছেন যে কোন ঢালাও গ্রেফতার হচ্ছে না বরং সাম্প্রতিক সময়ে যেসব সহিংসতা ঘটেছে সেগুলোর ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।হেফাজত নেতারা বলছেন যে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘটনাগুলোর সঠিক তদন্তের অনুরোধ করেছেন এবং একই সাথে বলেছেন যে হেফাজত সরকারের প্রতিপক্ষ নয়, এমনকি তারা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনও নয়।

তারা বলছেন, তারা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাইছেন এটি তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তার সাথে বৈঠকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।

একই সঙ্গে রোজার মাসে কওমি মাদ্রাসার আয় বেশি হয় এবং অনেক মাদ্রাসায় ‘এতিম শিক্ষার্থী’রা থাকে উল্লেখ করে মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়ার কথা বললে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিষয়। সূত্র: বিবিসি