মন্ত্রীর নির্দেশেই স্বাস্থ্যের ফাইল গায়েব: রিজভী

আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২১
0
file photo

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৭ টি ফাইল মন্ত্রীর নির্দেশেই গায়েব করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৭ টি ফাইল গায়েব হয়ে যায় এতে কি বুঝতে বাকী আছে? এটা করো বুঝতে বাকি নেই। আমার মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতারা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাচ্ছে। তাই যাতে কোনো ডকুমেন্ট না থাকে সেজন্য এই ১৭টি ফাইল গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। কারণ সামনে কোন পরিস্থিতি হয়, আবার এই ফাইলগুলো থেকে কত টাকা কোন জায়গা থেকে কত পার্সেন্টেস দেয়া হয়েছে তার যদি কোনো ডকুমেন্ট থেকে থাকে এ জন্যই ফাইলগুলো হাওয়া করে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যপণ্য, ও ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পে ব্যবহৃত সুতা, রঙ,ক্যামিকেল এর দাম ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল কর্তৃক এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশ আজ এমন এক অবস্থায় শেখ হাসিনা নিয়ে গেছে যার না আছে স্বাধীনতা, না আছে সার্বভৌমত্ব, আর গণতন্ত্র অনেক দিন আগেই গোরস্থানে কবর দিয়েছেন তিনি। তার যা ইচ্ছা তিনি তাই করবেন এ জন্য তাকে কোন জবাবদিহি করতে হবে না।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, রাষ্ট্রপতি মানে রাষ্ট্রের অভিভাবক, জাতির অভিভাবক, কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রপতি হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি। একটা অবৈধ পার্লামেন্ট থেকে নির্বাচিত অবৈধ রাষ্ট্রপতি। তার নাক দিয়ে যদি একটু পানিও পড়ে হয় যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর, না হয় লন্ডন। আর বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বারবার বলা হয়েছে। যে তিনি বাইরে থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী কি মনে করেন? আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ১/১১ এর সময় মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন, কিন্তু খালেদা জিয়া কি দেশ ছেড়েছেন?

সরকার বিনাভোটে ক্ষমতার রাজসিংহাসনে বসে আছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ওই সিংহাসনের পা ধরে ধুলায় লুটিয়ে দিতে হবে। তাহলে আবার এদেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস ফিরে আসবে।

রিজভী বলেন, আজকে প্রত্যেকটি জায়গা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের পার্সেন্টিস নিশ্চিত করতেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। মানুষের গলায় পা দিয়ে তারা টাকা তুলছে এই ক্ষমতাসীনরা। তারা অনির্বাচিত। তারা অগণতান্ত্রিক, তাদের নির্বাচনের দরকার নেই। তাই যারা ডাকাত, লুটেরা, দস্যুবৃত্তি যাদের রাজনীতি তারা কখনোই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে চায় না।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করলেও তাদের কোনো নদীর পানি বিশাক্ত নয়। আর আপনার তুরাগ নদী, বুড়িগঙ্গা নদী নর্দমায় পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। আর আপনি গেছেন গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে। বাহ কি বৈপরিত্য, কি স্ববিরোধীতা।

শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিশেধগার করেন। এটা আপনার সহজাত বৈশিষ্ট, এটা ছাড়া আপনার ঘুম হয় না। জিয়া পরিবার, খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সমালোচনা না করলে শেখ হাসিনার ঘুম হয় না। গ্লাসগোতে গিয়েও তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছেন। আপনি যে সময় তুরাগ নদী, বুড়িগঙ্গা নদী নর্দমায় পরিণত করেছেন, আপনার পুলিশের মামলা, গ্রেফতারের হুমকীর মুখেও বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশে বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বর্ষার মধ্যে বৃক্ষ রোপন করেছে। তাই তারেক রহমান আর শেখ হাসিনার মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য। আপনি ধ্বংসের পক্ষে আর তারেক রহমান সৃষ্টির পক্ষে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, আপনি অর্থের কথা বলেন? তারেক রহমান অর্থ কোথায় পায়? আপনার ফরিদপুরের ছাত্রলীগ নেতা ২হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, তারপরও আপনি কোন লজ্জায় এসব কথা বলেন। আপনার একজন মন্ত্রীর ছেলে নিউইয়র্কে সবচেয়ে দামি এপার্টমেন্ট কিনেছে। খবরের কাগজে এসেছে, বানিয়ে বলছি না। তারপরও আপনি দুর্নীতির কথা বলেন। আজকে মানুষের মুখে মুখে বেগম পাড়া, সেকেন্ডহোম, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়ায় বাড়ি ঘর। আপনি কি খবরের কাগজ একবারও পড়েন না।

তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ‍যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, তাঁতী দলের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন ইসলাম খান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।