মানবিকবোধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরশাসককে পরাস্ত করুন —- তারেক রহমান

আপডেট: জুন ২৬, ২০২৩
0

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন , বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসকে দমন করার জন্য সরকার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে । মানবিকবোধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরশাসককে পরাস্ত করতে হবে। নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ বাণী দিয়েছে।
বাণীটি দেশ জনতা ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো——-

“২৬ জুন নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশসহ বর্তমান বিশে^র প্রেক্ষাপটে এ দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে জাতিসমূহ স্বাধীনতা অর্জন করলেও এখনও সহিংসতা ও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। বিশ্বব্যাপী চলছে নানা মাত্রায় হিংসা ও সংঘাতের রক্তক্ষরণ। সংঘাত ও বিরোধের কারণেই সাধারণ মানুষেরা দেশে দেশে নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর দমননীতির কারণে বিরোধী মতের অসংখ্য মানুষ মারাত্মক নির্যাতন সহ্য করছে।

মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাযন্ত্রণা ভোগ করছে। এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই নির্যাতনের পরিকাঠামো নির্মাণ করে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেখানে নিষ্ঠুর ও কতৃর্ত্ববাদী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে সেখানে রাষ্ট্রের অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মানুষ নানাভাবে দমন—পীড়ণের শিকার হচ্ছে। সারা বিশ্ব আজ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশীদুর এগুতে পারেনি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন বন্দী, এখানে ভয়াবহ দুঃশাসন চলছে। গুম, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ার আর গায়েবী মামলায় সারাদেশে এক ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী সংবিধানকে পদদলিত করে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিষ্ঠুর ক্ষমতার শক্তি প্রয়োগ করে হরণ করা হয়েছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অসংখ্য সাংবাদিককে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক সংবাদপত্র, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে বিরোধীদের কণ্ঠ শোনা না যায়। আর এই ধারাবাহিকতায় এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দী রাখা হয়েছে। এমনকি তাঁর সুচিকিৎসাকেও সরকার বেআইনীভাবে বাধা প্রদান করছে।

বাংলাদেশে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিঞ্চু আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেই লেলিয়ে দেয়া হয় তাদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ছোবলে গণতন্ত্রকে করা হয়েছে দেশছাড়া। বিরোধী দল, মত ও বিশ^াসকে দমন করার জন্য সরকার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। একমাত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থাকে গুঁড়িয়ে দিতে সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। আন্দোলন—সংগ্রামের তীব্রতা দেখে আওয়ামী অবৈধ সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম—নির্যাতন চালাতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে—কারণ বিরোধী শক্তি যেন সরকারের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া না দিতে পারে।
আমি তাই নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে নানা প্রতিকুলতা বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী মহল ও স্বৈরশাসককে পরাস্ত করা সম্ভব।