যশোর জেলার সদর উপজেলার মালঞ্চি গ্রামে গৃহবধূ চুল কেটে মুখে চুনকালি লাগিয়ে মারধর করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদের যথাযথ শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতি প্রদান করেছে।
মহিলা পরিষদ বলেছে , ”গত ৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে- যশোর জেলার সদর উপজেলার মালঞ্চি গ্রামে গৃহবধূ চুল কেটে মুখে চুনকালি লাগিয়ে মারধর করার ঘটনার ঘটেছে। জানা যায়, নয় মাস আগে নির্যাতিত গৃহবধূ কাজল রেখার প্রথম স্বামী রেজাউল ইসলাম মারা যান।
পরে তিনি প্রতিবেশী নওয়াব আলীকে বিয়ে করেন। প্রথম স্বামী কাজল রেখাকে ৪ শতক জমি লিখে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে তিনি ওই জমিতেই বসবাস করছিলেন। ওই জমির ওপর রেজাউলের চাচাতো ভাই আজগর হোসেন ও রিপন হোসেনের লোভ থাকায় জমি থেকে কাজল রেখাদের বিতাড়িত করতে নানা ফন্দি আঁটে এবং জমি ফেরত দিতে চাপ দেয়।
এ নিয়ে গত ০৬.১১.২০২১ তারিখ শনিবার সালিশ বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হলে গ্রামের মাতব্বর শিমুল কাজল রেখাকে গাছে বাঁধতে নির্দেশ দেয় এবং মালঞ্চি মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে রাজিবুল হক শিমুল (৩২), মৃত হায়দার আলীর ছেলে রিপন হোসেন (৩০), মৃত আকবর আলীর ছেলে আজগর আলী (৩০), পেচো আলীর ছেলে আকতার আলী (৩০), আজগর আলীর ছেলে বিউটি খাতুন (২৮), আকতার আলীর স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৭) এবং রিপন হোসেনের স্ত্রী জোসনা বেগম (২২)। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২/৩ জনকে তাকে গাছে বেঁধে মারধর করে মাথার চুল কেটে, মুখে চুনকালি মাখিয়ে মারধর করে। পরে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গৃহবধূ চুল কেটে মুখে চুনকালি লাগিয়ে মারধর করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িতদের যথাযথ শাস্তির লক্ষ্যে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছে এবং গৃহবধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
একইসাথে বেআইনী সালিশ/ বেআইনী ফতোয়া ও বিচার বর্হিরভূত শাস্তি বন্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বিষয়েও সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে এই ধরণের ঘটনাসহ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সকল সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।
