মির্জা ফখরুল জামিন পাননি, হাইকোর্টে রুল খারিজ

আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২৪
0

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় জামিন পাননি। এই মামলায় তার জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়েছ
বুধবার বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে আদেশ দেন।

আদালতে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন আইনজীবী মো: সগীর হোসেন লিওন। আদালতে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, মো: আসাদুজ্জামান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, মো. আক্তারুজ্জামান, মনিরুজ্জামান আসাদ, মো. মাকমুদ উল্লাহ প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল।

আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলামের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।

আদেশের পর জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা আদালতে বলেছি এই মামলার এফআইআরে কোথাও তার সংশ্লিষ্টতার কথা নেই। তিনি খুবই অসুস্থ, হৃদরোগে আক্রান্ত একজন বয়স্ক ব্যক্তি। এই মামলার ১১ নম্বর আসামি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জামিনে মুক্তি পেয়ে এমপিও নির্বাচিত হয়েছেন। হাইকোর্টের পূর্ণ এখতিয়ার আছে তাকে জামিন দেয়ার। আদালত শুনানি শেষে আমাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এখন আমাদের সামনে আছে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ। আমরা ক্লায়েন্টের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর তার জামিন আবেদন নিয়ে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রুল জারি করেন আদালত। একইসাথে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এরও আগে গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এদিকে রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ৯ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি আজ বুধবার বেলা ১টায় তার অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত মঙ্গলবার মির্জা ফখরুলের পক্ষে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন। একইসাথে বুধবার বেলা ১টায় তার জামিন আবেদনের শুনানির জন্য ধার্য করেন।

মঙ্গলবার মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদনের আংশিক শুনানি শেষে বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ৩১ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে করা ৯ মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জামিনের আবেদন করেন। পরে আদালত আসামির উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ৯ মামলায় জামিন আবেদন গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট শাখায় মির্জা ফখরুল পক্ষে আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন রিটটি দায়ের করেন।

রিটে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১০টির মামলার মধ্যে পল্টন থানার ৭টি এবং রমনা থানার ৩টি মামলার কথা উল্লেখ রয়েছে। মামলাগুলো ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বিচারাধীন।

আইনজীবীরা জানান, ১২ ডিসেম্বর সিএমএম আদালতে বিচারাধীন ১০টি মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন করা হয়। তবে আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় জামিন আবেদনগুলো গ্রহণ করে নিষ্পত্তির নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

এই মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।