মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই তরুণরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বে : সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ

আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২১
0

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মইনীয়া যুব ফোরাম, গাজীপুর জেলা আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র চেয়ারম্যান ও মইনীয়া যুব ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সূর্য সন্তান। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক শ্রেণীর ২৩ বছরের শোষণ-নিপীড়ন থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ডাকে দেশমাতৃকার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে লাল সবুজের গৌরবের পতাকা উপহার দিয়েছেন তাঁরা। তাই তারাই রাষ্ট্রের নিকট সর্বোচ্চ সম্মানের পাত্র। তাদের সম্মানিত করলেই জাতির মর্যাদা সমুন্নত হবে।

সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজের অসঙ্গতি দূর হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্ম ত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। লাল সবুজের পতাকা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।

সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ মহতী ক্ষণে এসেছি, এখনও পর্যন্ত আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারি নি। দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার অভাব, ধনী-গরীবের বৈষম্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই প্রত্যয়কে পূরণ হতে দেয় নি। তাই তরুণরা যারা আগামী দিনে জাতিকে নেতৃত্ব দেবে, তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারকে অন্তরে ধারণ করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। তাই হবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতি জানানো। তিনি আরো বলেন, আমার মুর্শিদ কেবলা সাইয়্যিদ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.) ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের মহান সংগঠক। মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি। দীর্ঘ নয় মাস দরবার শরীফে জাতীয় পতাকা উড্ডীন ছিল।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মইনীয়া যুব ফোরামের সভাপতি শাহ্জাদা সাইয়্যিদ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল হাসানী। তিনি অডিও বার্তায় বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা সাথে নিয়ে মইনীয়া যুব ফোরাম দেশ ও মানবতার সেবায় কাজ করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেমন ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছেন, তেমনি তরুণদেরও দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ সামাজিক ব্যাধিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এর আগে গাজীপুর জেলার সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.)কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এসময় স্বাধীন সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আনোয়ার হোসেন আকাশসহ অন্যান্য পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গাজীপুরের কৃতী সন্তান মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আহসান উল্লাহ মাস্টারসহ গাজীপুর জেলার ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিঞা মাইজভাণ্ডারী, খলিফা সাইফুল ইসলাম মাইজভাণ্ডারী, বীর মুক্তিযাদ্ধা খলিফা মোহাম্মদ বশির উদ্দীন, আন্জুমান সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জালাল উদ্দিন, মইনীয়া যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক মো: জুনায়েদ সিদ্দিকী, মহানগর যুব ফোরাম সভাপতি রেজা উদ্দীন রানা, স্থানীয় খলিফাবৃন্দ, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন।