যত ভয়, হুমকি আসুক শেখ হাসিনা মাথা নত করবেনা: নোয়াখালীতে কাদের

আপডেট: জুলাই ২৩, ২০২৩
0

.বিএনপি নেতাদের চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে, আন্দোলন হয়না: কাদের।

আজাদ ভুঁইয়া, নোয়াখালী :

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেননা। ভিসা নীতি তাকে ভয় দেখিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা করে তাকে ভয় দেখিয়েছে। শেখ হাসিনা বললেন আমি শেখ মুজিবের কন্যা আমাকে ভয়ে দেখিয়ে কোন লাভ নেই। যত ভয়, হুমকি আসুক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাথা নত করবেনা, মাথা নত করতে পারেনা।

শনিবার (২২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের বলেন, তারেক রহমান কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই টাকার ৪০ কোটি শেখ হাসিনা উদ্ধার করেছে। এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারেক রহমানের অর্থ পাচারের কথা সারা দুনিয়ার মানুষ জানে। চুরির টাকা,পাচারের টাকা, দুর্নীতির টাকা, হাওয়া ভবনের টাকা। এই অপকর্ম, অপশক্তিকে রুখতে হবে।

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, সৎ, সাহসী, মানবিক একজন মাত্র নেতা শেখ হাসিনা। তিনি উন্নয়ন, দক্ষতা, সাহস ও কৌশলের জন্য সারা দুনিয়ায় আজকে তিনি প্রশংসিত। শুধু বাংদেশীরা নয়, একবাক্যে বিদেশীরাও শেখ হাসিনার প্রশংসা করে। শেখ হাসিনা প্রতিদিন রাতে তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা ঘুমান। বাকী ২১ ঘন্টা দেশ নিয়ে ভাবেন, মানুষ নিয়ে ভাবেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। সে কারণে শেখ হাসিনাও কষ্ট পাচ্ছে।

কাদের বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান দম্ভ করে বলেছিলেন মানি ইজ নো প্রবলেম। টাকা কোন সমস্যা নয়। আর আজ লন্ডনে বসে জিয়াউর রহমানের পলাতক পুত্র তারেক রহমান, সে গতকাল স্কাইপিতে বলেছে টাকার কোন অভাব হবেনা। পিতা যা বলেছে পুত্র তাই বলছে। এত টাকা এলো কোথ থেকে। তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছে। আর রজনীতি করবেনা বলে অঙ্গীকার করে। সেই তারেক রহমান এখন বলে টাকার কোন অভাব হবেনা। আন্দোলন করে শেখ হাসিনার পতন ঘটাও। আজকে তারেক রহমান টাকার দম্ভ দেখাচ্ছে। টাকা হলে নাকি আন্দোলন করতে পারেব।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, আজকে বিএনপি নেতাদের চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে। আন্দোলন হয়না, এই বছর না ওই বছর আন্দোলন হবে কোন বছর। এই বছর বলে রোজার ঈদের পরে আন্দোলন হবে, এরপর বলে কোরবান ঈদের পর আন্দোলন হবে। এরপর বলে পরীক্ষার পর আন্দোলন হবে। এভাবে দেখতে দেখতে ১৪বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর। আন্দোলন বিএনপির নাগালে এলোনা।

তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে বলেন, এই দুর্নীতিবাজ তারেক রহমান। বাংলাদেশের মানুষ জানে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দেশ থেকে লন্ডন পালিয়ে গেছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করবে এটাকি বিশ্বাস হয়। অলি গলিমে শোর হায় তারেক রহমান চোর হায়। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে টাকা পাচারের বিরুদ্ধে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে।

মির্জা ফখরুলকে ইঙ্গিত করে বলেন, মির্জা ফখরুল মিথ্যাই বলে যাচ্ছে। এ মিথ্যাই তাদের পতন ঘটাবে।

বাংলাদেশের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, রাজনীতি করার লোক আজকে রাজনীতিতে নেই। কিছু ব্যক্তি, কিছু গোষ্ঠী আজকে রাজনীতিতে এসে টাকার জোরে, গায়ের জোরে, মাস্তানি করে, বন্দুক উঁচিয়ে আজকে বাংলাদেশেকে বারে বারে নসাৎ করছে, দখল করছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, নোয়াখালী ১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম, নোয়াখালী ৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ কিরণ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা খানম, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন,
নোয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য ও হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহাকারী আলহাজ্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. এবিএম জাফর উল্যাহ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ. কে. এম সামছুদ্দিন জেহান, চাটখিল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর কবির, নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ভট্ট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত সহ আরও অনেকে।

এদিকে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি, উন্নয়ন ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলনে হেরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন, যে দল আন্দোলনে হারে, সেই দল নির্বাচনেও হারে।

ওবায়দুল কাদের আমেরিকার ভিসা নীতির সমালোচেনা করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিবে দাও, ভিসা নীতি দিবে দাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাল ভাত দিয়ে দেশের মানুষকে খাওয়াবে, আমাদের দেশকে বাঁচাবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে বলেন, মির্জা ফখরুল নোয়াখালী এসে হুমকি ধমকি দিয়ে গেছে। এই নোয়াখালী এক সময় বিএনপির ঘাটি ছিল। সেই নোয়াখালী এখন শেখ হাসিনার ঘাটি। এ সময় মন্ত্রী বলেন, বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তির বিশ্বস্ত ঠিকানা।

দলীয় নেতাকর্মিদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে হাত আগুন নিয়ে আসবে সে হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাত হামলা করতে আসবে সে হাত গুটিয়ে দিতে হবে। বিএনপির আস্ফালনের জবাব আমাদেরকে দিতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত বারিস্ট্যার মওদুদ আহমদকে ইঙ্গিত করে বলেন, আগে ভোট দিয়ে বানিয়েছেন। বিশাল বিশাল মন্ত্রী ছিল, পদে ছিল। কিন্ত আমার এলাকার দিকে তাকায়নি। আমার যা প্রতিশ্রুতি আমি তা পূরণ করব।

কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালী ১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম প্রমূখ।