শহীদ রহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমান স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২১
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শহীদ রহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহম্মেদ, লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন। এই সময় ফেডারেশনের বিভিন্ন মহানগরী, থানা ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ রহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, বাংলাদেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের একটি করদ রাজ্যে পরিণত করার জন্য স্বাধীনতার পরপরই নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়। যে নকশার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে তাদের হাতে সব সময় জিম্মি রাখার। আমরা যেন পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারি সেজন্য তারা প্রতিনিয়ত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনে যাচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য তারা এই দেশের এক শ্রেণির অসৎ ও দেশবিরোধী রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও আমলাদের ক্রয় করে নিয়েছে। ফলে তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়েছে। তাদের প্রতিটি বিষাক্ত থাবায় ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি। আমরা যখনই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুদৃঢ় করার চেষ্টা করেছি তখনই তারা বিষাক্ত ছোবল আমাদের উপর মেরেছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ছিল তেমনি একদিন। যে দিন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের রক্তাক্ত ইতিহাস রচিত হয়েছিল।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, ২৮ অক্টোবরের নারকীয় পৈশাচিক ঘটনা কোন নিরবিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং পলাশী প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে যে গভীর ষড়যন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২৮ অক্টোবর সেই ধারাবাহিকতার অংশ। যারা মানুষের মন থেকে ইসলাম ও দেশপ্রেম মুছে দিতে চায় তারা আজ সবাই এক প্ল্যাটফর্মে। সেদিন ভর দুপুরে রাজধানীর পল্টন ও তার আগের দিন থেকে দেশের বিভিন স্থানে দেশপ্রেমিক জনতার বাসভবন, রাজনৈতিক দলের অফিস ও সরকারি অফিস আদালতে ভয়াবহ তান্ডবলীলা শুরু করে। সেদিন প্রতিবেশি দেশের ইশারায় একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা লগি বৈঠার আঘাতে পিটিয়ে খুঁচিয়ে মানুষ হত্যার নতুন নির্মম ইতিহাস রচনা করেছিল। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কল্যাণে দেশের মানুষসহ সারাবিশে^র শান্তিপ্রিয় মানুষরা সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিল। রাজপথে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা অপর একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের এইভাবে নৃশংস ভাবে হত্যা করতে পারে এটি বিশ^বাসীর জানা ছিল না। আজ ২৮ অক্টোবরের ১৫ বছর পেরিয়ে আসলেও সেই খুনিদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। অবশ্য বিচার কারা করবে ? আজ যারা অবৈধভাবে ক্ষমতার মসনদ দখল করে আছে তারাই তো সেদিন ক্ষমতার লোভে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে নিজেদের বিক্রি করে দিয়ে ছিল। ইতিহাস বলে মজলুমের আর্তনাদ কখনো বিফল হয় না। একদিন না একদিন এই নারকীয় ঘটনার বিচার এই দেশের মাটিতে হবে। সেদিন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, শহীদ রহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমানের রক্তের দাগ বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে চাইলেও কেউ মুছে দিতে পারবে না। তাদের আত্মত্যাগের বদৌলতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও ইসলাম রক্ষার আন্দোলন আরো মজবুতি লাভ করবে। দেশের সর্বত্র তাদের মত আদর্শিক কর্মী তৈরি হবে। যারা নিজেদের থেকে এই দেশের মাটি ও ইসলামকে অধিক ভালোবাসবে। দেশ ও ইসলামের স্বার্থে অসংখ্য রহুল আমিন হাবিবুর রহমানরা নিজেদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে কার্পণ্য করবে না। সেদিন সকল ষড়যন্ত্রের নীল নকশা মুখ থুবড়ে পড়বে। ষড়যন্ত্রকারীরা পলায়নের পথ খুঁজবে কিন্তু তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোন পথ থাকবে না। বাংলার প্রতি ইঞ্চি মাটি সেদিন ২৮ অক্টোবরের নারকীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের সমুচিত জবাব দিবে।
আলোচন্ াসভা শেষে শহীদ রহুল আমিন ও হাবিবুর রহমানের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করা হয়। শহীদ পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের ধৈর্য ধরার তাওফিক কামনা করা হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলার শ্রমিক নেতা ফখরুল ইসলামের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা সহ-সভাপতি বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা ফখরুল ইসলামের (৬০) ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। এক যৌথ শোকবার্তায় নেতৃবৃন্দ ইসলামী শ্রম আন্দোলনে মরহুমের অবদানের কথা স্মরণ করে এ শোক প্রকাশ করেন।
শোকবার্তায় নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। নেতৃবৃন্দ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে মরহুমের নেক আমল সমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী ও আত্মীয়স্বজনকে ধৈর্য ধরার শক্তি দান করার জন্য দোয়া করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মরহুম ফখরুল ইসলাম ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের অগ্রসেনানী ছিলেন। তিনি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে আজীবন সম্পৃক্ত রেখেছেন। মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সর্বদা ছিলেন সোচ্চার। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মরহুমের ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা কবুল করুন।
উল্লেখ্য মরহুম ফখরুল ইসলাম আজ বুধবার ভোর ৫:৩০ ঘটিকায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী ও ২ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের জানাযা মরহুমের গ্রামের রামগঞ্জ উপজেলার ডা¹াতলী বাজার মসজিদে বাদ আসর অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মরহুমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।