‘শিক্ষার্থীদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘেরাও করে রাখার ঘোষণা’

আপডেট: মে ৩১, ২০২১
0

রাজনৈতিক মামলায় আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সোমবার সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের সঙ্গে সাক্ষাত করে এ আবেদন করেন তিনি।

পরে সাংবাদিকদের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে যদি কাজ না হয়, এটাও জানিয়ে দিতে চাই, আমরা ওনার (প্রধান বিচাপতি) বাসভবনে যাব। ঘেরাও করে বসে থাকবো, যতক্ষণ না ওনি আমাদের কথা না শুনেন।

এর আগে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করতে মাজার গেটে আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজীজ উলফাত, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর ও লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। সেখানে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থান করার পর তাদের ৭ জনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তারা।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাইকোর্ট হলো জনগণের জন্য একটা উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ। সেখানে প্রবেশে ক্ষেত্রে গেটে তালা লাগিয়ে তারা ভুল করছেন। হাইকোর্টের দরজা কখনো বন্ধ হতে পারে না। জনগণের বিচারের জায়গা এটি, ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে। আমি বলেছি, আপনারা যদি আমাকে ঢুকতে না দেন, দরকার হলে সারা রাত আমি ওই গেটে বসে থাকবো। আমি মুক্তিযোদ্ধা, কখনো পেছাতে শিখেনি। জয় নিয়েই ফিরবো। জয় নিয়েই ফিরেছি।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা রয়েছে, সেটি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আপনাদের। আমরা ১৮ জন ব্যক্তি একটা দরখাস্ত করেছিলাম। সেখানে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার সব ছাত্রের জামিন চেয়েছিলাম। আজকে তিন মাস হয়ে গেছে জামিন হয় না। তবে সৌভাগ্যের বিষয় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সাত দিনের মধ্যে জামিন হয়ে গেল। রোজিনার তথা কথিত অপরাধের চেয়েও ছাত্রদের অপরাধ কম। তাদের (ছাত্রদের) অপরাধ, তারা একটি ঘৃণ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধিক্কার দিয়েছে। এই কারণে তাদেরকে জেলে দিয়েছে। এই ছাত্রদের জামিন না দেয়া এর থেকে বড় অন্যায় আর কি হতে পারে। এই কথাগুলো প্রধান বিচারপতিকে জানাতে এসেছিলাম। ওনি (প্রধান বিচারপতি) আজকে অফিসে নাই। ওনার প্রতিনিধি রেজিস্টার জেনারেলকে জানালাম। আমরা বিচারে হস্তক্ষেপ নয়, আবার দীর্ঘ সূত্রিতাও চাই না। জেলা কোর্টে এই মামলাটা আছে, তারা যেন সেখানে রায় দেয়।

গত ২৫শে মার্চ মতিঝিলে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের সংঘর্ষের ঘটনায় মতিঝিল থানায় প্রথম মামলা হয়। এরপর গত ২৭ মার্চ প্রেসক্লাবের সামনে ধস্তাধস্তির ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়। উভয় মামলায় সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়। এ মামলায় বেশ কয়েকবার জামিন চেয়ে জামিন না মেলায় প্রধান বিচারপতির কাছে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য আবেদন করেন তারা।

গত ৮ই মে সরকারবিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার ছাত্রদের ঈদের আগে জামিনে মুক্তির দাবিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বরাবর চিঠি দেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। তারা হলেন- গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, নারী নেত্রী শিরিন হক, লেখক-নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।