সাজা কমাতে গিয়ে আরো ৩ বছর বাড়িয়ে কুয়েতে পাপুলের কারাদণ্ড বেড়ে ৭ বছর

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২১
0

শাহী ইমরান শিকদার , কুয়েত :
মানব পাচার, শ্রমীক নির্যাতন ও অর্থ পাচার এর অভিযোগে লক্ষীপুর ৪ আসনের সংসদ ও কুয়েতিয়্যাহ মারাফিয়া কোম্পানির মালিক শহীদুল ইসলাম পাপলু কে ৪ বছরের সাজা ও ১ মিলিয়ন দিনার জরিমানা করা হয়েছিল। সে এই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেছিল অন্য দিকে তার এই আপিল এ ক্ষেপে গিয়ে এক কুয়েতি তার সাজা আরো বাড়ানোর আপিল করে বসে। আজ আপিল এর রায়ে শহিদুল ইসলাম পাপলু কে ৪ বছরের পরিবর্তে ৭ বছর জেল ও ১ মিলিয়ন এর পরিবর্তে ২ মিলিয়ন জরিমানা করা হয়।

কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর সূত্র এবং দেশটির আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আল নাহার থেকে পাপুলের কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোর খবর জানা গেছে।

কুয়েতে পাপুলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় ঘুষ লেনদেন ও মানব পাচারের অভিযোগে এবং অন্যটি করা হয় অর্থ পাচারের অভিযোগে। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের দায়ে আগেই তাঁর চার বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। একই মামলায় এবার মানব পাচারের দায়ে আদালত ৩ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ কুয়েতি দিনারের অর্থদণ্ড দিলেন। অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

কুয়েতের আদালত সূত্রে জানা গেছে, আপিল আদালত আজ মানব পাচারের মামলায় পাপুলের পাশাপাশি আরও তিনজনকে কারাদণ্ডাদেশ দেন। তাঁরা হলেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহ, কুয়েতের সাবেক সাংসদ সালাহ খুরশিদ ও কুয়েতের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাঁদের সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মামলা থেকে কুয়েতের বর্তমান সাংসদ সাদুন হামাদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মূলত অবৈধভাবে বাংলাদেশের লোকজনকে কুয়েতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেনের দায়ে গত জানুয়ারিতে পাপুলের চার বছর কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করেন আদালত। এ মামলায় কুয়েতের তিন নাগরিকের পাশাপাশি সাংসদ পাপুলের তিন সহকর্মী এবং সিরিয়ার এক নাগরিককে কারাদণ্ড দেন আদালত।

পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার বিচার এখনো বাকি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থ পাচারের দায় এড়ানো সাংসদের জন্য কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁর সাজা আরও কয়েক বছর বাড়তে পারে।

মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পাপুলকে গত বছরের ৬ জুন রাতে তাঁর কুয়েত সিটির বাসা থেকে সে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আটক করেন।

এই মামলাসংশ্লিষ্ট কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সূত্র ও নথিপত্র থেকে জানা যায়, শুরু থেকেই পাপুলের বিরুদ্ধে মানব পাচারের পাশাপাশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগ ছিল। এমনকি কুয়েতে পাপুলের বাড়ির গ্যারেজে রাখা গাড়ি এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে চেকসহ আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রমাণ পান দেশটির গোয়েন্দারা।