সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বাড়ছে : হিলি বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের অবাধে বিচরণ : আতঙ্কিত জনপদ

আপডেট: জুন ১০, ২০২১
0

ভারতে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ৬ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে । কেরোনায় মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে বাংলাদেশেও । করোনার ভুকিঁ কমাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে পণ্য পরিবহনসহ সব ধরনের যোগাযোগ ব্যব্স্থা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু করোনার এই ঝুকিঁর মধ্যে বিভিন্ন সীমান্ত থেকে একদিকে ভারতীয়দের অবৈধ অনুপ্রবেশ যেমন চলছে তেমনি ,সীমান্তগুলো থেকে ট্রাক চলাচলও অবাধে চলছে।

গত ৩ দিনে ঝিনাইদহের মহেশপুর, হরিণাকুন্ড থেকে প্রায় অর্ধশত অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে বিজিবি। এছাড়াও সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীম্নত থেকেও রেতের অন্ধকারে এপাড় বাংলাদেশে অবাধে যাতায়াত করছে ভারতীয়রা । অনুপ্রবেশের জন্য ঝিনাইদহ- সাতক্ষীরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমন হার । অপরদিকে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কিছুটা কমেছে।

ঝিনাইদহ থেকে দেশ জনতা ডটকমের রিপোর্টার জাহিদুর রহমান তারিক জানান , সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে যাতায়াত বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যেই ঝিনাইদহে করোনা সংক্রমনের হার বেড়ে গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪১ ভাগ। যা গতকাল ছিল ২৪ দশমিক ৪৫ ভাগ। ফলে করোনার নতুন ধরণ চড়িয়ে পড়ার আশংকা প্রবল হচ্ছে। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, বুধবার সকালে খুলনা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ ল্যাব থেকে আসা করোনার ফলাফল পর্যালোচনা করে এই তথ্য জানান। তিনি জানান, ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে।

এদিকে বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহেশপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশের সময় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভাকুড্ডা গ্রামের খোরশেদ আলমের মেয়ে ফাতেমা আক্তার, মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিনয়গ্রামের ছাদেকুর রহমানের মেয়ে সুবর্ণা, খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা উপজেলার রকিশনগর গ্রামের কামালের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও দালাল জীবননগরের আজিজুলের ছেলে অপুকে বিজিবি আটক করে। একই দিন মহেশপুরের কানাইডাঙ্গা গ্রাম থেকে ময়মানসিংহ জেলার আলালপুর গ্রামের মফিদুল ইসলামের মেয়ে খালেদা আক্তার মুন্নিকে বিজিবি আটক করে। এরা অবৈধ পথে ভারতে যাচ্ছিলো। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান বুধবার এক ই-মেইল বার্তায় এ খবর জানান।

অপরদিকে হিলি থেকে সংবাদদাতা জানান যে , এখনও পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাকচালক ও সহকারীরা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই বন্দরে অবাধে বিচরণ করছে। এ অবস্থায় করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা ছড়িয়ে পড়ায় শঙ্কায় হিলিবাসী।

প্রতিদিন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পণ্য নিয়ে হিলি বন্দরে আসে প্রায় ২০০ ট্রাক। তবে, করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে দিনে সর্বোচ্চ ৮০টি ট্রাকে পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এসব ট্রাকের চালক ও তাদের সহকারীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা ছাড়া অন্য কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।

এ অবস্থায় বন্দরের ভেতরে ও বাইরে অবাধে ঘোরাফোরা করছেন তারা। ফলে, করোনার ভারতীয় ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বন্দরের কয়েকজন কর্মচারী।

এদিকে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকলেও ভারতীয় চালক ও হেলপারদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

হাকিমপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসান জানান, করোনা টেস্ট করিয়ে ভারতীয় ট্রাকচালক ও সহযোগীদের বাংলাদেশে প্রবেশের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।

ভারতীয় চালক ও হেলপারদের করোনা পরীক্ষার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তারা।