‘স্ট্রোক চিকিৎসায় অকুপেশনাল থেরাপি’ সিআরপি’তে বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস পালন

আপডেট: অক্টোবর ২৭, ২০২৩
0


সাভার প্রতিনিধিঃ

‘স্ট্রোক চিকিৎসায় অকুপেশনাল থেরাপি’ জাতীয় প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশে^র মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে ১৪ তম বিশ^ অকুপেশনাল থেরাপি দিবন। বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস ২০২৩ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগ, বিএইচপিআই ও সিআরপি এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি এসোসিয়েশনের (বিওটিএ) আয়োজনে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি’র হলরুমে “অকুপেশনাল থেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা বিষয়ক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবা এবং এ সেবায় নিয়োজিত পেশাজীবিদের সম্পর্কে দেশব্যাপী প্রচারনা ও প্রসারই হচ্ছে এবারের দিবসের মূললক্ষ্য।
সিআরপিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিআরপি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার (যুগ্ম সচিব) সৈয়দ মেহেদি হাসান।

বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে স্ট্রোক চিকিৎসায় অকুপেশনাল থেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের নির্বাহী সদস্য বিওটিএ এর সাধারন সম্পাদক অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ডাঃ শামীম আহম্মদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের অর্গানুগ্রামে অকুপেশনাল থেরাপিকে একটি বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করছি। এফ২০২৪ সাল থেকে আমরা একটি রিহ্যালিটেশন ইনস্টিটিউট করার পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। এখান থেকে পিএইচডি, এমফিল ও মাস্টার্স কোর্স করানো হবে। তবে এটি করতে গিয়ে তাদেরকে অনেক বাঁধা বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে জানিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিষয় তুলে ধরেন।
আলোচনাসভায় বক্তারা বলেন, সাম্পতিক সময়ে বাংলাদেশে স্ট্রোক, মেরুজ্জুতে আঘাত, ডিমেনশিয়া, ডিপ্রেশন, সিজোফ্রোনিয়া ইত্যাদি ব্যাপক আকারে বেড়ে চলেছে। সেই সাথে বাড়ছে নিউরো-ডেভলপমেন্টাল ডিডঅর্ডার যেমন, অটিজম, সেরিব্রালপালসি, বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা ইত্যাদি। এর ফলে মানুষ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দৈনন্দিন কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। যার বিরুপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এমতাবস্থায় অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা অপরিহার্য, যে চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষ আবার তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।
বক্তারা আরও বলেন, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশের প্রায় ২ কোটির বেশী লোক বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার। এই বিশাল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা ও পুর্নবাসনে বিশ^বিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী প্রাপ্ত অকুপেশনাল থেরাপিস্টের সংখ্যা মাত্র ৪০৮ জন, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় অপ্রতুল। তাই বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নিয়োজিত প্রায় শতাধিক সংস্থায় অকুপেশনাল থেরপিস্টগণের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবার ভূমিকা ও প্রয়োজনিয়তা সম্পর্কে সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে ‘‘স্ট্রোক চিকিৎসায় অকুপেশনাল থেরাপি’’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অকুপেশনাল থেরাপি দিবস পালিত হচ্ছে। সিআরপি’র প্রধান কার্যালয় সাভার ছাড়াও এর প্রতিটি শাখায় সাফল্যের সাথে দিবসটি উযদাপন করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্্ন প্রতিষ্ঠান যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে তারাও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে বলে জানান বক্তারা।