শহীদ জিয়ার জন্য আমরা ৭ নভেম্বর দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছিলাম–মীর্জা ফখরুল

আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১
0

সরকার দেশে একটা ‘ভয়ংকর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের বর্তমান অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে রোববার সকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পর বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, আজকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, আজকে এদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ৩৫ লক্ষের বেশি দেশপ্রেমিক মানুষকে আজকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হয়েছে, আজকে এখানে গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে।”

‘‘ দেশে ভয়ংকর একটা পরিস্থিতি সৃস্টি হয়েছে। আজকে তারা পুরোপুরিভাবে ফ্যাসিবাদী একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা করেছে।”

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে এই দিনে আমরা শপথ গ্রহন করেছি এদেশের মানুষের একত্রিত করে ঐক্যবদ্ধ হযে সমস্ত রাজনৈতিক দল, সমস্ত সংগঠন এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, আমাদের নেতা ভরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব। ’’

‘‘ বাংলাদেশেকে আমরা অবশ্যই আবার আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একটা স্বাতস্ত্র শক্তি নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবার এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের আন্দোলন করব।”

তিনি বলেন, ‘‘ ৭ নভেম্বরের মাধ্যমেই আমরা ফিরে পেয়েছিলাম যে আশা-আকাংখা ও চেতনার মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম সেই আশা-আকাংখা বাস্তবায়িত করবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিলো জিয়াউর রহমান সাহেবের নেতৃত্বে। ৭ নভেম্বরে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র-স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত করতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম।”

‘‘ আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছিলাম, মুক্ত অর্থনীতি একটি সমাজ নির্মাণ করবা্র সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সামাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আবার রুখে দাঁড়িয়েছিলো, সংবাদপত্রের ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছিলো। সর্বোপরি যেটা বাংলাদেশে স্বাতন্ত্র নিয়ে, পরিচয় নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ পেয়েছিলো। আমরা বার এই দিনটিকে স্মরণ করি এবং এই দিনটি আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।”

ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আজকে এই ৫০ বছর পরে এই স্বৈরাচারি-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একটা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে আমাদের সমস্ত স্বপ্ন ও আশা-আকাংখাকে ধূলিসাত করে দিয়েছে, চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সমস্ত স্তম্ভগুলোকে তারা নিজের হাতে নিমর্মভাবে ধবংস করে দিয়েছে।”

সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। তারা জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা বিশেষ মোনাজাত করেন।

এ সময়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, দেওয়ান মো. সালা্উদ্দিন, আবু আশফাক খন্দকার, অঙ্গসংগঠন আফরোজা আব্বাস, সাইফুল আলম নিরব, হেলেন জেরিন খান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সাদেক আহমদে খান, আমিনুল হক, শাহ নেসারুল হক, হেলাল খান, আবুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, জাকির হোসেন রোকন, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, নুরুল ইসলাম নয়ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। তারা জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা বিশেষ মোনাজাত করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান স্বপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনা প্রধানের দায়িত্ব আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনা বাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়, জিয়া হন গৃহবন্দী।

৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের আরেক সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন জিয়া।

বিএনপি এই দিনকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস এবং জাসদ সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালন করে।

দিবসটি উপলক্ষে ভোরে নয়া পল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারাদেশে দলের অফিসে বিএনপির পতাকা উত্তোলন করে।