স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তামাক থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে থাকার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী

আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২৩
0


২৮ অগাস্ট, সোমবার , ২০২৩, ঢাকা:

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তামাক এবং মাদক থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে থাকার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে। এই অগ্রগতির ধারক হবে নতুন প্রজন্ম। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সুস্থ সমৃদ্ধ তরুণ প্রজন্ম দরকার। তাই সমস্ত ধরনের নেতিবাচক বিষয় থেকে আমাদের তরুন প্রজন্মকে দূরে থাকতে হবে। এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারবো আমরা।

সোমবার (২৮ অগাস্ট) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত ও জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকগনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. দীপু মনি এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, ড. শাম্মী আহমেদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জনাব আমিনুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সভার সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি।


সভার বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, নতুন প্রজন্মকে স্বাধীন বাংলার সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে এই দেশে দীর্ঘদিন আমরা সঠিক ইতিহাস থেকে দূরে ছিলাম। দুরন্ত বাংলাদেশের এই গতিকে ধরে রাখতে হলে নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবত হতে পারলে এই জাতি আরো সমৃদ্ধ হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনাব আমিনুল ইসলাম বলেন, আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের দরকার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মত আলোকিত প্রজন্ম। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষা নিতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের জানতে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনের জন্য আমাদের চরিত্র, চিন্তা, ও চেতনার উন্নতি ঘটাতে হবে। আসুন আমরা শপথ গ্রহন করি বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুসরণ করে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মো. মশিউর রহমান বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং তরুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধরে রেখে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করার জন্য আহবান জানান।

সভাপতিত্বের বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এজন্য জরুরী যে, ধূমপান না করেও আমাদের সন্তানেরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও নারীরা ভুক্তভোগী হচ্ছে। আমরা চাই, যেকোন মূল্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন। এজন্য অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া প্রস্তাবনা দ্রুত পাশের উদ্যোগ গ্রহণে ১৫২ জন সংসদ সদস্যের সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে ডায়েরি ভুক্ত করা হয়েছে। ‘

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশের অঙ্গীকার বিষয়ক উপস্থাপনা করেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস’র অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ তামাক গ্রহন করে। তাদের কারনে বাকি ১৩ কোটি মানুষও তামাকের প্রভাবে আক্রান্ত হয়। বছরে দেশের প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায় এই তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। তাছাড়া, বাংলাদেশ তামাকের কারণে প্রতিবছর প্রায় ৭ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সুতরাং, আমাদের জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে তরুন সমাজ ও শিশু-কিশোরদের রক্ষার্থে এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের গুরুত্ব অপরিসীম।

সভায় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, ধূমপান থেকে মুক্তি ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শপথ করান। এর মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সর্বাত্বক সহায়তায় একাত্বতা প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অতিথিবৃন্দও এই শপথ গ্রহণ করেন।

সভায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহমেদ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত দেশ জুড়ে প্রায় ৪০০’র বেশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্লাবের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা ও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, তামাক-বিরোধী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অধ্যাপক, ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

উক্ত অনুষ্ঠানের প্রেস রিলিজ [বাংলা] এবং ছবি সংযুক্তি আকারে দেয়া হল। উক্ত খবরটি আপনার দৈনিক পত্রিকা/ সংবাদ সংস্থা/অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশ/প্রচার করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।