হালাল উপার্জন ফরজ ইবাদতের সমান

আপডেট: মে ৫, ২০২৩
0

ডেস্ক রিপোর্ট :
মানুষ একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল সামাজিক জীব। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে। ইহকালীন জীবনে মানুষকে জীবিকা নির্বাহের জন্য বেছে নিতে হয় বিভিন্ন কর্ম ও পেশা। বিনিময় করতে হয় শ্রম।

পৃথিবীতে যারা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে তাদের সবাই নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই তা লাভ করেছে। বলা হয়ে থাকে, ‘পরিশ্রম সাফল্যের প্রসূতি।’ অন্যদিকে শ্রমবিমুখতা জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে বিরাট অন্তরায়। শ্রমবিহীন ব্যক্তি দেশ ও জাতির জন্য বোঝাস্বরূপ। আল্লাহর প্রেরিত জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের মধ্যে মানুষের ব্যক্তিগত ও সমাজজীবনের নিরাপত্তার জন্য ব্যক্তিশ্রম বা কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে।

অনুরূপভাবে ইসলামে শ্রম ও কর্মকে ইবাদত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সমাজজীবনে আল্লাহর বিধান ও রাসুল (সা.)-এর প্রদর্শিত পন্থায় শারীরিক পরিশ্রম করাকে ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর সবার জন্যই তাদের আমল অনুসারে মর্যাদা রয়েছে। আর আল্লাহ যেন তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন। আর তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ১৯)

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) শ্রমকে ভালোবাসতেন। যিনি সব নবীর সরদার হয়েও নিজ হাতে জুতা মেরামত করেছেন, কাপড়ে তালি লাগিয়েছেন, ছোটবেলায় মাঠে মেষ চরিয়েছেন। নবীজি (সা.) ব্যবসা পরিচালনাও করেছেন। খন্দকের যুদ্ধে সাহাবাদের সঙ্গে নিজে পরিখা খনন করেছেন। বাড়িতে আগত মুসাফির কর্তৃক বিছানা অপবিত্র করে রেখে যাওয়ায় নিজ হাতে তিনি তা ধৌত করে মানবতা ও শ্রমের মর্যাদাকে সর্বোচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পরিশ্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, কিছু গুনাহ এমন আছে, যা হালাল রিজিক উপার্জনের চিন্তা ছাড়া মাফ হয় না। (তাবারানি, মুজামুল আওসআত, হাদিস : ১০২)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরজ। (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)

ইসলামে কোনো পেশাকে ছোট করা হয়নি। পৃথিবীতে যে যত পরিশ্রমী সে তত বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারণ পরিশ্রমের কারণে প্রতিভার বিকাশ ঘটে। পরিশ্রমী ব্যক্তিরাই নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারো পক্ষে এক বোঝা লাকড়ি সংগ্রহ করে পিঠে বহন করে নেওয়া কারো কাছে চাওয়ার চেয়ে উত্তম। কেউ দিতেও পারে, না-ও দিতে পারে।’ (বুখারি, হাদিস : ২০৭৪)