হিন্দি বুঝতে না পারায় শ্লীলতাহানি! ‘‌পাকিস্তানি’‌ বলে কটূক্তি কলকাতায়

আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১
0

শাড়ি কিনতে দোকানে গেছিলেন শাশুড়ি, বৌমা। কিন্তু দোকানির হিন্দি কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁদের। সেকথা জানাতেই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হল তাঁদের। কেড়ে নেওয়া হল হাতের ফোন। শুনতে হল প্রশ্ন, ‘‌আপনারা কি পাকিস্তানি’‌? পরে পুরো বিষয়টি বড়বাজার থানায় জানিয়ে এফআইআর করা হয় ওই দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে। গতকাল রাতের এই ঘটনার পর আজ সকালেও রীতিমত আতঙ্কে ভুগছেন ওই দুই মহিলা।

দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসিন্দা দুই মহিলা, ফাতেমা আখতার ও তাঁর শাশুড়ি রোকেয়া বিবি বাজার করতে গতকাল বড়বাজারের ‘‌অনুরাগ টেক্সটাইল’‌ দোকানে ঢোকেন। অনুরাগ আগরওয়াল নামে এক অবাঙালি ব্যবসায়ী এই দোকানের কর্তা। ওই দুই মহিলা পরে জানান, দোকানে কেনাকাটার সময়ে এই দুই মহিলা দোকানদারের হিন্দি কথা না বুঝতে পারায় তাঁকে একাধিকবার বিনীতভাবে অনুরোধ করেন, বাংলায় কথা বলতে। বাংলা বলা ও হিন্দি না বোঝার কথা শুনে অনুরাগ আগরওয়াল নাকি তাঁদের বলেন, ‘‌বাঙালিদের হিন্দি বলতেই হবে, কারণ এটা হিন্দুস্তান। এখানে শুধু হিন্দি চলবে। হিন্দি না বললে ভারত তাদের জন্য না, তারা কি পাকিস্তানি?’‌

অভিযোগ, এরপর ওই ব্যবসায়ী ও দোকানের অন্য কর্মচারীরা ওই দুই মহিলার হাত মুচড়ে দেয়, টাকার ব্যাগ কেড়ে নেয়, মোবাইল ছিনতাই করার চেষ্টা করে, অশ্লীল গালাগালি দেয় এবং বলপূর্বক বৃদ্ধাকে আটক করে রাখে। এই সময়ে ফতেমা আখতার ‘‌বাংলা পক্ষ’‌ সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা অফিসে ফোনে যোগাযোগ করেন। এরপরে ‘‌বাংলা পক্ষ’‌ এবং বড়বাজার থানার পুলিশের সহযোগিতায় দোকানে আটক দুই মহিলাকে উদ্ধার করা হয়।

থানায় অভিযোগ জমা করার পর এই দুই মহিলা ‘‌বাংলা পক্ষ’‌ সংগঠনের সাহায্যে বাড়ি পৌঁছন। সংগঠনের তরফে কৌশিক মাইতি বললেন, ‘‌বাংলা ও বাঙালির রাজধানী কলকাতার বড়বাজারে বহিরাগত অপরাধীরা ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে সেখান থেকে বাঙালিকে মেরে ধরে তাড়িয়ে দখল করেছে।

প্রতিদিন এখানে শত শত বাঙালি লাঞ্ছিত হয়, অপমানিত হয়, মার খায়, প্রতারিত হয়। এর আগে বাঙালি ব্যবসায়ী রোহিত মজুমদারকে এই বড়বাজারেই বহিরাগত কিছু ব্যবসায়ী ও তাঁদের দলবল মিলে বাংলা বলার জন্য বাংলাদেশী বলে ও মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাংলা পক্ষর সাথে উনি যোগাযোগ করলে পরের দিন আমরা সবাই মিলে গিয়ে প্রতিবাদ জানাই ও তাঁকে সাহায্য করি।’‌

কলকাতা শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা বড়বাজার। দিনভর এখানে ব্যবসার কাজ চলে। প্রচুর মানুষের যাতায়াত থাকে। সেখানে এরকমভাবে দুই মহিলার শারীরিক হেনস্থার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে প্রশাসন।