‘৯৯৯’এ স্ত্রীর ফোন, পুলিশের গন্ধ পেয়ে পালালো ডা.মুরাদ

আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২
0
dr murad

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেছেন পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) তিনি ফোন করে জানান, তাকে মারধর করা হচ্ছে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ৯৯৯ থেকে বিষয়টি জানানো হয় ধানমন্ডি থানা পুলিশকে। এরপরই পুলিশের একটি টিম মুরাদের বাসায় যায়।

এ দিকে অভিযোগের পরে পুলিশ তার বাসায় গেলে, মুরাদকে পাওয়া যায়নি। মুরাদকে বাসায় না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক তদন্ত সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ধানমন্ডির ১৫ নম্বর সড়কে ওই বাসায় গিয়েছিল, তবে সেখানে মুরাদ হাসানকে তারা পাননি।

এ ব্যাপারে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের ১৫ নম্বর সড়কের বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণ নাশের হুমকির অভিযোগ আনেন তিনি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রিত্ব হারানোর আগে একের পর এর বেহিসেবি কথা বলে আলোচনায় আসছিলেন মুরাদ। ভাইরাল হওয়ার একটা নেশা হয়তো পেয়ে বসেছিল তাকে। গত অক্টোবরে প্রথম রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরোধিতা করে আলোচনায় আসেন মুরাদ হাসান। সেসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো ধর্ম ব্যবসায়ী, মৌলবাদীদের আস্তানা হতে পারে না। যে কোনো মূল্যে ’৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এই ঘটনার পর পর প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের পুরনো কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ অনেক রাজনীতিকও এর নিন্দা জানিয়েছিলেন।

তখন থেকেই একের পর এক বিকৃত অশালীন বক্তব্য, প্রতিহিংসামূলক আক্রমনাত্মক অঙ্গভঙ্গি সব মিলিয়ে ভাইরাল হয়ে আলোচনায় ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান।

তবে মুরাদকে নিয়ে বিতর্কের এখানেই শেষ নয়। মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসন থেকে দুবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর তাকে প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কয়েক মাস পরই তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

তবে নিজ এলাকায় ১০১ সদস্যের সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। মুরাদের সন্ত্রাসী বাহিনীরা সদস্যরা যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ টিআর, জিআর, কাবিখার বরাদ্দ লুটপাট চালিয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।

এদিকে, মন্ত্রিত্ব হারিয়ে মুরাদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং ফের দেশে ফেরা নিয়েও কম নাটক হয়নি। মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর গত ৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশত্যাগ করেছিলেন মুরাদ। এরপর কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলেও তাকে সে দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।সেখান থেকে তাকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।কিন্তু দুবাইও তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। এর পর ১২ ডিসেম্বর বিদেশে ঠাইঁ না পেয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি।