কুড়িগ্রাম ১ আসন :পাঁচ প্রার্থীর তিন প্রার্থীর খোঁজ নেই ভোটের মাঠে

আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৪
0

লাঙ্গলের বিজয়ের এখন বাধা গোলাপের কাটা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রাম-১ (ভূরুঙ্গামারী-নাগেশ্বরী) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারনা চলছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক অতি সহজেই বিজয়ের আশা করলেও তার বিজয়ের একমাত্র বাধা হয়ে দাড়িয়েছে গোলাপ ফুল। গোলাপ ফুলের কাটা এখন জাপা প্রার্থীর বিজয়ের পথকে আটকে দিচ্ছে। 

জাকের পার্টির প্রার্থী আব্দুল হাই মাষ্টার গোলাপ ফুল নিয়ে লাঙ্গলকে রীতিমতো চ‍্যালেন্জ ছুড়ে দিয়েছেন। লাঙ্গল আর গোলাপ ফুলের মধ‍্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে দুই উপজেলার নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

প্রচার প্রচারণায় পাঁচ প্রার্থীর মধ‍্যে জাপা প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও কেউই নির্বাচনকে জমিয়ে তুলতে পারছেনা। গত তিন দিন আগে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দুই উপজেলার আওয়ালীগের একটি অংশকে নিয়ে প্রচারণা জমিয়ে তুলার চেষ্টা করছেন। অপরদিকে আওয়ামীলীগের বর্তমান এমপি আসলাম হোসেনের নেতৃত্বে অপর একটি অংশ জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী ভোট পাগল আব্দুল হাই মাষ্টারের পক্ষে মাঠে নেমে নির্বাচনটাকে জমিয়ে তুলে লড়াই করার মতো একটা জায়গায় নিয়ে এসেছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী অংশ নিলেও প্রচারের মাঠে দুই প্রার্থী ছাড়া অন্যদের দেখাই মিলছে না। জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী প্রচার প্রচারণা চালালেও অন্য তিন প্রার্থীর প্রচারণা অনেকটাই দায়সারা। নির্বাচনের আর মাত্র ৭ দিন বাকি থাকলেও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মনিরুজ্জামান খানা ভাসানী (এক তারা প্রতীক ) এখনো নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরুই করতে পারেননি। বাকী দুই প্রার্থী ন‍্যাশনাল পিপলস পাটির্র নুর মোহাম্মদ (আম মার্কা) ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কাজী লতিফুল কবীর রাসেলের পক্ষে (ফুলের মালা) দুই একদিন মাইকিং করলেও প্রার্থীর খোঁজ নেই ভোটের মাঠে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪২৯ এবং ভূরুঙ্গারী উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা  ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩৪ জন। 

গত শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দুই উপজেলার হাট-বাজার ও চায়ের দোকানগুলোতে জাতীয় পার্টি মনোনীত সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান লাঙ্গল এবং জাকের পার্টি মনোনীত আব্দুল হাই গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়েই আলোচনা চললেও অন্য প্রার্থীদের বিষয়ে অনেকেই খোঁজ-খবর নেন না। এই দুইজন বাদে অন্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে কোন অফিস বা গণসংযোগও চোখে পড়েনি।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ভোটার  আসাদ, রুহুল আমিন, ও মাহবুব এবং নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিজানুর,রফিকুল  ও শাহীন বলেন  এই নির্বাচনী এলাকার মানুষ দুই প্রার্থী লাঙ্গল ও গোলাপ ফুল মার্কার প্রচার প্রচারণা দেখছেন। তারা আরো বলেন শুনেছি এবার এমপি নির্বাচনে আরো নাকি তিন প্রার্থী আছেন। তাদের আমরা কখনো দেখিওনি এবং চিনিও না।

ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোবাশ্বির জামান, রাসেল ও রনি জানান, এবার সংসদ নির্বাচনে আমরা প্রথমবার ভোট দেব। শুনেছি এবার ৫ জন ভোটে দাড়িয়েছে। সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে চিনি। বাকি ৩ জনের নাম কখনো শুনিনি।ভোটের মাঠেও তাদের দেখছিনা।

দায়সারা প্রচারণার ন‍্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ(আম মার্কা) বলেন, আমরা তো নতুন তাই লোকে অতটা চেনে না। পরিচিত হতেই নির্বাচনে এসেছি। দুই উপজেলাতে পোস্টার লাগানো হয়েছে এবং মাইকিংও করা হচ্ছে। তবে কোন জনসভা বা পথসভা করিনি এখনো।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মনিরুজ্জামান খানা ভাসানী (এক তারা) জানান, ৬টি দল মিলে জোট করেছি। জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখনো জোটের কোন সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা শুরু করতে পারিনি।

এবিষয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন মনোনীত প্রার্থী কাজী লতিফুল কবীর রাসেল বলেন (ফুলের মালা প্রতীক) আমি ভোটের প্রচার প্রচারণা করছিনা এ কথাটি সঠিক না। প্রতিদিনই ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি এবং জনগনের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়াও পাচ্ছি।

জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী (গোলাপ ফুল প্রতীক) সাবেক ইউপি ও উপজেলা চেয়ারম‍্যান আব্দুল হাই মাষ্টার বলেন প্রচারণা চালাতে গিয়ে একাধিক জায়গায় লাঙ্গল এর কর্মীদের বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি। শনিবার রাতে নাগেশ্বরীর হাছনাবাদ ইউনিয়নে আমার নির্বাচনী জনসভায় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়েছে। শত বাধা এলেও আমি নির্বাচনী মাঠ ছাড়বনা। আমার জয়ের ব‍্যাপারে আমি অনেকটাই নিশ্চিত।

আওয়ামীলীগ- বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় প্রচার প্রচারণায় অনেকটাই নির্ভার জাপা। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী (লাঙ্গল প্রতীক) ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, কুড়িগ্রাম-১ আসনের ভোটারেরা আমাকে ভোট দিয়ে ৪ বার এমপি নির্বাচিত করেছে। এবারও জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে ইনশাআল্লাহ।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, এই আসনে ৫ জন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনে আমরা শতভাগ আশাবাদী।

#

০২.০১.২০২৪