দুর্নীতি-লুটপাট-অপশাসনের তথ্য আড়াল করতে সরকার নতুন দুইটি ‘নিবর্তনমূলক’ নীতিমালা করেছে–মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মার্চ ১২, ২০২২
0

মুক্তিযুদ্ধে্র সঠিক ইতিহাস, দুর্নীতি-অপশাসনের তথ্য আড়াল করতে সরকার নতুন দুইটি ‘নিবর্তনমূলক’ নীতিমালা করেছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নির্বতনমূলক এই নীতিমালা দুইটি হচ্ছে: ‘দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন কমিশন রেগু্লেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস-২০২১’ এবং ‘ওভার দ্য টপ(ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিসেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালা-২০২১’।

শনিবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব বলেন, ‘‘ সোজা কথায় বলা যায়, এই নিবর্তনমূলক নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি-অপশাসন, তাদের ভোট ডাকাতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ডের বিষয়গুলো প্রচার ঠেকাতে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে পরিমান ইতিহাস বিকৃতি করেছে সেই বিষয়ে কথা না বলার জন্যও তারা এই নীতিমালা ব্যবহার করবে।”

‘‘ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পোক্ত করতেই এই দুইটি নীতিমালা প্রনয়ন করা হয়েছে যাতে করে আরো শক্ত করে ধরা যায়। দেশের জনগনের বাক স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে, সংবাদপত্র, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক মাধ্যম এবং দেশি-বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এই দুই নীতিমামলাসহ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখন তো খসড়া করে্ছে। এটা যদি দেখি যে, সরকার এই নীতিমালাকে গ্রহন করে ব্যবস্থা নিচ্ছে তখন তো আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেবো।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই দুইটি নীতিমালা শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিকই নয়, বরং জাতিসংঘ ঘোষিত ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস(ইউডিএইচআর) এবং ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস(আইসিসিপিআর) এর পরিপন্থি।সেই সাথে জাতিসংঘের অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ম্যানিলা প্রিন্সিপাল এবং সান্তা ক্লারা প্রিন্সিপালের সিদ্ধান্তের দৃষ্টিতে দেখলে এই দুইটি নীতিমালা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

‘‘ এই নীতিমালা প্রণয়নের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে জনগনের কন্ঠরুদ্ধ করে একদলীয় বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।”

তিনি বলেন, ‘‘ এই নির্বতনমূলক নীতিমালা কার্য্কর হলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশী অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়াগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকারকে বাধাগ্রস্থ করবে। পাশাপাশি অনলাইন এনক্রিপশন অকার্য্কর করে নিরাপত্তাকে দূর্বল করে ফেলবে। এর ফলে মানবাধিকারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।”

‘‘ সাংবাদিক, বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদ, মানবাধিকার কর্মী এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠি আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”