নির্বাচনে ভোট পাবে না বলে বিএনপি সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় যেতে চায় —শেখ হাসিনা

আপডেট: ডিসেম্বর ৪, ২০২২
0

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আপনাদের দোয়া, সহযোগিতা ও ভোট চাই। যাতে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার বিকেলে বন্দরনগরীর ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে লাখো মানুষের বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি আপনার কাছে একটি প্রতিশ্রুতি চাই যে, অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দেবেন এবং আমাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। হাত তুলে বলুন, আপনি নৌকায় ভোট দেবেন। এসময় উপস্থিত জনতা দুই হাত তুলে তাদের সম্মতি জানায়।

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে আমরা দেব না। কারণ ওই জামাত-বিএনপি খুনির দল, যুদ্ধাপরাধীর দল, জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদদ দানকারীর দল। এমনকি আমাকেও তো বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে। কাজেই, এরা যেন বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চুষে খেতে না পারে আর যেন তারা এদেশে আসতে না পারে। 

আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ইউনিট আয়োজিত মহাসমাবেশে শেখ হাসিনা ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা উন্নয়ন করি। মানুষের কল্যাণ দেখি। আর বিএনপি মানুষ খুন করে, মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এটাই হচ্ছে তাদের কাজ। বিএনপি মানুষের শান্তি চায় না। চট্টগ্রামেও তারা বারবার গ্রেনেড মেরেছে, গুলি চালিয়েছে। লালদীঘির ময়দানে সমাবেশ করতে গেছি সেখানে তারা গুলি চালিয়েছে। সেদিন যে পুলিশ অফিসার গুলি চালিয়েছিল খালেদা জিয়া তাকে প্রমোশন দিয়েছিল। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারার হিসাব একদিন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিতে হবে। জিয়াউর রহমান যখন মারা যান, ৪০ দিন পর্যন্ত আমরা শুনেছি, জিয়া কিছু তার পরিবারের জন্য রেখে যায় নি। একটা ভাঙা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া নাকি কিছুই রেখে যায়নি। আমার প্রশ্ন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসতে না আসতেই হাওয়া ভবন খুলে তার ছেলে যে চাঁদাবাজি, অর্থ সংগ্রহ এবং অর্থ পাচার করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে, ওগুলো কোথায় থেকে এলো? ভাঙ্গা স্যুটকেস তো আর জাদুর বাক্স হয়ে যায়নি। 

শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্ভ এবং ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আমি, আর সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অপপ্রচার করছে। অথচ এই কয়েকদিনে যারা টাকা তুলতে গেছে তারা সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে। 

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন সামনে নির্বাচন, আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে চলছে। ভোট পাবে না বলে বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করতে চায়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় একটা তারিখ। বোধ হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে।

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। বিএনপির দুইটা গুণ আছে, ভোট চুরি আর মানুষ খুন; ওইটা পারে। অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা, মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করার জবাব একদিন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াকে দিতে হবে, এর হিসেব একদিন জনগণ নেবে।

প্রায় ১১ বছর পর চট্টগ্রামে জনসভা করলেন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে ১৪ দলের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

আমাদের সময় ডটকম