‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারকে হটাতে না পারলে দেশ অনাচারমুক্ত হবে না—খন্দকার মোশাররফ

আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৩
0
file photo

বর্তমান ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারকে হটাতে না পারলে দেশ থেকে ‘অনাচার-অনিয়মমুক্ত’ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

 

বৃহস্পতিবার বিকালে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

 

তিনি বলেন, ‘‘এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে আমরা হটাতে চাই, এই সরকারকে না হটাতে পারলে যত অনাচার-অত্যাচার, যত রকমের অন্যায় আছে তা আমরা দূরীভূত করতে পারব না। অর্থাত গণতন্ত্র না থাকলে স্বাভাবিকভাবে কোনো সেক্টারই সুন্দর ভাবে চলতে পারে না। সেটাই আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে গণতন্ত্রকে হত্যা করে, তারা স্বাধীনতার পরে করেছিলো বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে, এখন আবার করেছে।”

 

‘‘ অতএব এখন আমাদেরকে এই বাংলাদেশকে উদ্ধার করতে হবে। আমি আশা করি যে, আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষ, খ্রিষ্টান হন, হিন্দু হন, বৌদ্ধ হন, মুসলমান হন আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভুমিকে উদ্ধার করবো, জনগনের কাছে দেশের মালিকানা ফেরত দিতে পারব।”

 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘ আজকে আমাদের সামনে একটাই চ্যালেঞ্জ- সেই চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যে, এদেশের মালিক জনগন। সেই জনগন আমি-আপনি সকলে। এদেশের সকল জনগন বাংলাদেশী।বাংলাদেশটা এদেশের জনগনের।”

 

‘‘ কিন্তু যারা আছে সরকারে বা ক্ষমতায় তারা স্বাধীনতার পরে যা করেছিলো, এখনো তাই করেছে। এটা জনগনের এই দেশকে আওয়ামী লীগের একটি গোষ্ঠি করাত্ব করে নিয়েছে, তারা এগুলো করছে। এদেশকে উদ্ধার করে জনগনের কাছে ফেরত দিতে হবে। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ, বাংলাদেশকে জনগনের কাছে ফেরত নিতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”

 

বিএনপির ঘোষিত ‘রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা’র প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘ সেখানে ১৬ নং দফায় আছে, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এটা হচ্ছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেয়া রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখার একটি। এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবে।”

 

‘‘ আমাদের দলের যে আদর্শ, আমাদের দলের যে গঠনতন্ত্র তার মধ্যে আছে ২ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, ধর্ম বিশ্বাস এবং ধর্মপ্রিয়তা বাংলাদেশী জাতির এক মহান একটি চিরঞ্জীব বৈশিষ্ট্য। আমরা যার যার ধর্মকে বিশ্বাস করি, শ্রদ্ধা করি, মানি। আমরা সকলের সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা শুনেছেন, বাংলাদেশে আজ কত জায়গা নানা রকমের বাধা সৃষ্টি করছেন, ধর্মীয় মন্দিরে গীর্জায়.. এগুলো বলে শেষ করা যাবে না।”

 

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শুভ বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সাথে এই মতবিনিময়ের এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের লন্ডন থেকে স্কাইপেতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন। বাইবেল পাঠের পর প্রধান অতিথির উপস্থিতিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদা্য়ের সদস্যদের নিয়ে বড়দিনের কেক কাটেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 

তারেক পরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

 

বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টার সভাপতিত্বে এবং সুব্রত চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতৃবৃন্দের মধ্যে শীবল রিবেরু, শশধর দ্রং, জন জেদ্রা, মার্শেল এন চিরান, মৃগেন হাগিদক, যোয়েল আন্তণী চৌধুরী, জর্জ ওয়াসিন্টন, পবিত্র প্রামানিক, মন্টু পিটার রোজারিও, অনিল লিও কস্তা, শ্যামল রঞ্জন ভৌমিক, নিতাই কুমার সাহা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।