রক্তের হিসাব জনগণ আদায় করে নেবে: দুদু

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
0

বিএন‌পির ভাইস চেয়ারম‌্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, কোন আন্দোলন সংগ্রামের রক্ত বৃথা যায় না। কোন শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। আগামী দিনে এই রক্তের হিসাব বর্তমান সরকারের কাছ থেকে এদেশের জনগণ আদায় করে নেবে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি নেতা সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আল, শ্যামা ওবায়েদ, তাবিত আউয়াল এর ওপর নিশংস হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু ব‌লেন, এই সরকার বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য, বয়জ্যেষ্ঠ নেত্রী সেলিমা রহমান , সাবেক মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য বরকতউল্লাহ বুলু ও তার স্ত্রীর ওপর নৃশংস হামলা করেছে, রক্তাক্ত করেছে। জনতার মেয়র তাবিথ আউয়াল এর ওপর হামলা করেছে। আঘাত করা হয়েছে শামা ওবায়দের ওপর। আঘাত করা হয়েছে শত শত নেতাকর্মীদের উপর। এই র‌ক্তের হিসাব এদেশের জনগণ নি‌বে।

কৃষক দলের সাবেক এই আহবায়ক বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ‘কথিত’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এদেশে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৪ ও ১৮ নির্বাচন নিয়ে ব্যাখ্যা করার কিছু নাই। এই নির্বাচনে যে জালিয়াতি হয়েছে এত বড় জালিয়াতি শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের অন্য কোন রাষ্ট্রেও হয় নাই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে। মোমবাতি জ্বালানোর মতো অনুষ্ঠানই তারা সহ্য করতে পারে না। অথচ
নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে। এত নিরীহ কর্মসূচি বাংলাদেশে বোধ হয় আর নাই। সেই মোমবাতি টাও তারা নিভিয়ে দিতে চায়।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, চট্টগ্রামের ডিসি বলেছেন কেমন নির্বাচন হবে। কার কার জন্য দোয়া করতে হবে। কিন্তু নির্বাচন পর্যন্ত এ সরকার গেলেতো নির্বাচন করবে।

সরকারের কাছে একটাই প্রত্যাশা জানিয়ে দুদু বলেন, আমাদের একটাই দাবি পদত্যাগ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। সংসদ ভেঙ্গে দেন। বিশৃঙ্খলার হাত থেকে দেশকে বাঁচান। তা না হলে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তা এদেশের জনগণের জন্যে না সরকারের জন্যও ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যিনি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে থাকার কথা, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চার বছর ধরে আটক করে রেখেছেন। যিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান, তাকে লন্ডনে থাকতে বাধ্য করেছেন। বিএনপি’র সাথে কুকুর-বিড়ালের মত আচরণ করছেন। যেখানে যাকে খুশি মারছেন, বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র লুটপাট করছেন। বিরোধীদল যেন ঘরের বউ, যা খুশি তাই করছেন। এর পরিণতি ভালো হবে না। বাংলাদেশ এর নজির আছে। বিদেশেও এর নজির আছে। যারা অত্যাচারী ফ‌্যাসিস তাদের বিদায় পরিণতি অনেক ভয়াবহ হয়।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, অতি সত্তর অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। যারা জোর করে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে তাদেরও বিচার হবে। এমনি এমনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে নাই। আপনারা কলমের খোঁচায় তা বাতিল করে দেবেন আমরা এমনি মেনে নেব তা হবে না। এই বাঙালি জাতি তা মেনে নিবে না।

তিনি আরও বলেন, সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। তার জন্য এক সাগর রক্ত দেওয়া লাগলেও দিবো। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যেমন এক সাগর রক্ত দিয়েছে এদেশের মানুষ। ঠিক তেমনি আবার এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন হলে আরো রক্ত দেবো তবুও ফ্যাসিবাদকে এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি’র সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।