রাজধানীর সোয়ারীঘাটে জুতা কারখানায় অগ্নিকান্ডে ৫ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের উদ্বেগ

আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২১
0

রাজধানীর সোয়ারীঘাট এলাকায় রুমানা রাবার ইন্ডান্ট্রিজ নামে একটি জুতা কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৫ শ্রমিকের মৃত্যু এবং ২ শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় ‘শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম’-এসএনএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

বিভিন্ন সংবাদপত্রের সংবাদে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ওই কারখানাটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। রোমানা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় বার্মিজ ও স্পন্সের জুতা তৈরি করা হতো। কারখানাটিতে জুতা তৈরিতে ব্যবহৃত রাবার, প্লাস্টিক ও কেমিক্যাল ভর্তি অনেক ড্রাম ছিল। এসব দাহ্য পদার্থের কারণেই আগুন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। হতাহত শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটিতে আবাসিক থেকে কাজ করতেন। অগ্নিকান্ডের সময় শ্রমিকরা সেখানে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে শুক্রবার ভোরে পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম মনে করছে, শ্রম আইন (২০০৬) অনুযায়ী নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও যথাযথ সুরক্ষা যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা না রাখা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলেছে। ফোরাম উপরোক্ত ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছে। একই সাথে আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়াসহ নিহত ও আহত শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানদন্ড (লস অফ ইয়ার আর্নিং) অনুসরণ করে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৭৮ ধারায় বিষ্ফোরক বা দাহ্য গ্যাস, ধুলা ইত্যাদির নিরাপত্তার বিষয়ে এবং ৭৮.ক এর ৩ উপধারায় কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রুমানা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় অগ্নিকান্ডে শ্রমিক মৃত্যুর এই ঘটনায় এটি প্রতীয়মান হয় যে, সেখানে শ্রম আইনের এসব বিধানসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি।

ফোরাম লক্ষ্য করছে যে যত্রতত্র কারখানা গড়ে তোলা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব বা অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বারবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইতিপুর্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশসমুহ বাস্তবায়নের আহ্বান জানায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।