শনিবার নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি

আপডেট: মে ১০, ২০২৩
0

বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি আদায় ও গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা এবং পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। বুধবার (১০ মে) রাত ৮টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘আগামী ১৩ মে (শনিবার) দুপুর ২টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকাবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

কর্মসূচি ঘোষণার আগে রিজভী বলেন, ‘অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক উপসংহারহীন অবস্থার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবারও নিঃশব্দ আতঙ্কের পরিবেশে ভোটারবিহীন নির্বাচনের ফন্দি-ফিকির করছেন তিনি। গায়েবি মামলা এই সরকারের রাজনীতিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিএনপির মৃত নেতা, অসুস্থ নেতা এবং বিদেশে অবস্থান করছেন এমন নেতাদের বিরুদ্ধেও গায়েবি মামলা দিয়ে দেশ-বিদেশে তামাশার পাত্রে পরিণত হয়েছে আওয়ামী সরকার। এরা বিএনপিসহ বিরোধী দল-মত ও সমালোচকদের দমন করার জন্য গায়েবি মামলা দায়ের করে সেটিরই প্রমাণ। শুধু দেশেই নয় বিদেশেও এই অবৈধ সরকারের আমলে আইন আদালতের সততা নিয়ে বিশাল প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরা জনগণকে বলে এক কথা, আর ক্ষমতায় এসে করে তার বিপরীত কাজ।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে কখনোই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কোন কথা নেই, কিন্তু ক্ষমতায় এসে সেটি বাতিল করেছে। এই ঘটনা বিস্ময়কর ও জনগণের প্রতি মারাত্মক অসদাচরণ। আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, স্বচ্ছ নির্বাচন করবো বিদেশীরা কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না। সুতরাং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথায় জনগণের মনে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাচ্ছে যে, শেখ হাসিনার সরকার আরেকটি অস্বচ্ছ ও পাতানো নির্বাচনের গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের মানসিকতা শান্তি, সহাবস্থানের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে এরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এদের ভাষা ভয়ঙ্কর। সমাজের স্থিতিকে ভেঙ্গে ফেলার সমতুল্য। বর্তমান দানবীয় দুঃশাসনে নিরপেক্ষতা কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। দলীয় আনুগত্য সর্বক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়ে থাকে। রাষ্ট্রের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দলীয় ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং সুশাসন নির্বাসিত হওয়ায় টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও ভূমি দখলের মতো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে।

‘এদিকে কর্মসংস্থানের বেহাল অবস্থা, ক্রমহ্রাসমান আয় এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠলেও নিশিরাতের সরকার বিরোধী দল দমনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। সরকারের মন্ত্রীদের অশালীন কু-কথা, গায়েবি মামলা, নির্বিচারে গ্রেফতার এবং কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের কোন কমতি নেই।’

রিজভী আরও বলেন, সন্ত্রাস, নির্যাতন আর মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা হোক। এই সরকারি অনাচারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে একযোগে মাঠে নামাটা এখন নাগরিক কর্তব্য। গণতন্ত্র মানবসভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান। ‘গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের অবিচল নির্ভিক নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দল-মত-পেশা নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।