শুভ জন্মদিন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২৩
0

শুভ জন্মদিন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ক্ষুরধার লেখক সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের আজ জন্মদিন।তার জন্মদিনে দেশ জনতা ডটকমের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

মাহমুদুর রহমান (জন্ম: ৬ জুলাই ১৯৫৩) । ২০০৮ সাল থেকে মাহমুদুর রহমান আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও তিনি একজন বাংলাদেশী প্রকৌশলী এবং ব্যবসায়ী। বর্তমানে মালয়েশিয়াতে তিনি উচ্চতর ডিগ্রী লাভের জন্য পড়াশুনায় ব্যস্ত রয়েছেন।

মাহমুদুর রহমান গতানুগতিক ধারার রাজনৈতিক নেতা নন। তিনি বুয়েট থেকে পাশ করা একজন ইঞ্জিনিয়ার, সেই সাথে সফল ব্যবসায়ী এবং বিএনপি শাসনামলে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এটি প্রতিমন্ত্রীর সমান মর্যাদাসম্পন্ন একটি পদ। পরবর্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নির্বাচিত হওয়ায় তিনি বিএনপি সমর্থক রাজনীতিক বলে গণ্য হতে পারেন। তবে গতানুগতিক রাজনৈতিক তৎপরতা ও ক্ষমতা ভোগ তার ধাঁতে নেই। তিনি তার মেধা ও কলমকে একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পক্ষে পরিচালিত করতে চাইছেন।

বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইসলামের ইতিবাচক প্রভাব এবং তার মতে দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙ্গার লক্ষ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক চেতনা ও জনমত গড়ে তোলা তার কলম যুদ্ধের মূল প্রতিপাদ্য। প্রায় ৯বছর আগে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করার প্রক্রিয়াটি ছিল বেশ নাটকীয় ও প্রলম্বিত। গ্রেফতার এড়াতে মাহমুদুর রহমান মাসাধিককাল ধরে কারওয়ান বাজারে আমারদেশ অফিসে সহকর্মী সাংবাদিকদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন।

২০১৮ সালে সর্বশেষ একটি প্রোগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে সেগুন রেস্তোরায় জনাব মাহমুদুর রহমান।

শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার বরণ করতেই হয়েছিল। মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার এবং আদালতে নিজের আইনজীবী নিয়োগ না করে আত্মপক্ষ সমর্থন, যুক্তিউপস্থাপন এবং প্রতিপক্ষের যুক্তিখন্ডনের পাশাপাশি আদালতের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে জামিন না চাওয়ার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। মাহমুদুর রহমান ও তার সমর্থকদের দাবী অনুসারে বিনা অপরাধে তাকে গ্রেফতার ও বিচারিক হয়রানির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। মাহমুদুর রহমান কখনো ভোটের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেননা।

সরকারের বিরুদ্ধে তার সাহসী ও ক্ষুরধার কলাম, পাঠকপ্রিয়তা ও প্রচারসংখ্যায় আমারদেশ পত্রিকার বাড়বাড়ন্তই সরকারের পক্ষ থেকে তার বিপদের মূল কারণ বলে মনে করেন তাঁর সমর্থকরা। একজন সম্মানীত পেশাজীবী, সিনিয়র সিটিজেন, সাবেক জ্বালানী উপদেষ্টা এবং বহুল প্রচারিত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হওয়ার এই দীর্ঘ সময়ে মাহমুদুর রহমান কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, ব্যাংকে ঋণখেলাফের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন কিংবা লুটপাট-দখলবাজির মত কোন অভিযোগ শোনা যায়নি। এমনকি বিএনপি ও জোটের ভুল রাজনীতি এবং দলীয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেও তাঁকে কলম ধরতে দেখা গেছে।

১১ এপ্রিল ২০১৩ ইং, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে তাকে কাওরান বাজারের আমার দেশ পত্রিকার কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাহমুদুর রহমান তার সংবাদপত্রের মাধ্যমে সরকারের একজন আপোষহীন শক্তিশালী সমালোচক। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫০ বারের ও বেশি মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্ত করে দল এবং সরকারী কর্মকর্তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

মাহমুদুর তার কর্মজীবন ব্রিটেনের গ্যাস কোম্পানি ব্রিটিশ অক্সিজেন কোম্পানিতে অপারেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি মুন্নু সিরামিক, ডাকান ব্রাদার্স, বেক্সিকো গ্রুপ, পদ্মা টেক্সটাইল গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। জাপানেও সুনামের সহিত কাজ করেছেন।

১৯৯৮ সালে মাহমুদুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৯ সালে তিনি আর্টিসান সিরামিক লিমিটেড নামে কোম্পানি গড়ে তোলেন। এটিই সিরামিকে দেশের প্রথম প্রযুক্তিগত “ব্রেক থ্রো” ও চীনা বোন কারখানা ছিল। ২০১৩ সালে তিনি আর্টিসান বিক্রি করে দেন।
কর্মজীবন (রাজনীতি)

২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে ২০০২ মাহমুদুর জাতীয় বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।তিনি বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে পাচঁ আই ( “five ‘I’s”) থিওরি প্রচলন করেন। তার উল্লেখযোগ্য কাজ হল মেঘনা এনার্জি লিমিটেড, কাচঁপুরের জন্য বিদেশী বিনিয়োগ আনয়ন। ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিদেশী বিনিয়োগ ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি পায়; যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।২০০৪ সালে জাতিসংঘ প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশের বিদেশী বিনিয়োগ ছিল ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধিদল আওয়ামীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২০ জন নিহত ও ৩০০ অধিক আহত হয়; ফলে সরকার বিরোধী হরতাল লাগাতার চলতে থাকে। মাহমুদুর উভয় পক্ষের সমালোচনা করে বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বিদেশী বিনিয়োগের জন্য হুমকি, এবং এর জন্য সরকারি নিরাপত্তা প্রদান করা উচিত। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে রাজনৈতিক অস্থিরতার জের ধরে এর প্রতিবাদ স্বরুপ প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা প্রত্যাখ্যান করলে তার চুক্তির দুই বছর বিনিয়োগ বোর্ডের দায়িত্ব সমাপ্ত করেন।

মাহমুদুর রহমান সত্য প্রকাশে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন বার বার। জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এরপরেও নিজের জীবন ঝুকিতে রেখে সহকর্মীর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবলেন। এমন সম্পাদক বাংলাদেশে দ্বিতীয়জন নেই।
আল্লাহ সম্পাদক মহোদয়কে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করুন।
আবারো যেন বাংলাদেশ থেকে আমারা আমার দেশ বের করতে পারি সম্পাদকের জন্মদিনে সেটাই সবার দোয়া কামনা করি।