শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২২
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, বাংলাদেশে যুগের পর যুগ ধরে শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত শোষিত হচ্ছে মালিকদের দ্বারা। শ্রমিকের ওপর চলা শত শত শোষণ বঞ্চনা দেখার পরও রাষ্ট্র নিশ্চুপ রয়ে যায়। রাষ্ট্রের কর্তা ব্যক্তিরা মালিকপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে নিশ্চুপ থেকে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার অস্বীকার করছে। এই অবস্থা শ্রমিকদের পরিত্রানের জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দলমত আদর্শ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। শ্রমিকের ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আর কোন বিকল্প পথ নেই।
তিনি আজ রাজধানী ঢাকার একটি চাইনিজ রেস্তোরায় বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও মত বিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে উপরিউক্ত কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে অংশগ্রহণ করেন ন্যাশনাল ওয়াকার্স ফেডারেশনের সভাপতি আলমগীর মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কবির আহমাদ, বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ মো: জাকির হোসেন, জাতীয় শ্রমিক ফোরামের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন সহিদ, শ্রমিক মজলিসের সভাপতি মো: নুর হোসেন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনী কর্মচারী ইউনিয়নের প্রধান সমন্বয়কারী শাহাজাহান কবির, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী জোটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী জামিল, বাংলাদেশ সংযুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ফেরদৌসি বেগম, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এইচ এম বিল্লাল, বাংলাদেশ গণপূর্ত অধিদপ্তর জাতীয় কর্মচারী সংসদের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি সাহিদা সরকারসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও জাতীয় ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।
হারুনুর রশিদ খান বলেন, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমিক। শ্রমিকের কর্মের ওপর দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি নির্ভরশীল। যে দেশের শ্রমিকের রক্ত ঘামে রাষ্ট্রের চেহারা বদলে যায়। নতুন নতুন অবকাঠামো, পথঘাট-দালান কোঠা তৈরি হয়। অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। দেশের কর্তারা নামি দামি গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। থাকে সুউচ্চ দালানে। সে একই দেশে শ্রমিকরা থাকে ঝুপড়ি ঘরে। তাকে এক বেলা খেয়ে অপর বেলা উপোষ থাকতে হয়। প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয় দারিদ্রের সাথে। একই পোশাক পড়তে হয় বছরের পর বছর। কর্মক্ষেত্রে আহত হয়ে বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়। শ্রমিকের সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়। এ যেন একই দেশে দ্বৈত নীতি। এই নীতির পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সর্বপ্রথম শ্রমিক সংগঠন গুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের প্রতিটি সংগঠনের নীতি আদর্শ স্ব স্ব সংগঠনে চর্চা হবে। নীতি আদর্শ নিয়ে আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে এক মঞ্চে এসে দাঁড়াতে হবে। সকল মতভেদ ভুলে হাতে হাত রেখে রাজপথে শ্রমিকের পক্ষে কন্ঠ সুউচ্চ করতে হবে। শ্রমিক ন্যায্য অধিকার আদায় না পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।