জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩
0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেয়ার পর জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রেখেছে।

শনিবার (১৭ জুন) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন ১৭ জুন শনিবার ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। অধিবেশনে সংগঠনের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমানসহ গ্রেফতারকৃত সকল শীর্ষ নেতাকর্মী এবং আলেম-উলামা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সকল নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়।

“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বর্তমান সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেওয়ার পর জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রেখেছে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমানকে গত বছর ১২ ডিসেম্বর তাঁর নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরীকে প্রায় দুই বছর যাবত কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভের পর মুক্তির পূর্ব মুহূর্তে বারবার তাদেরকে নতুন নতুন মিথ্যা ও সাজানো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখা হচ্ছে। জামিন লাভের পর মাওলানা শামসুল ইসলামকে ২ বার, মিয়া গোলাম পরওয়ারকে ৪ বার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে ২ বার মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা অত্যন্ত বিস্মিত যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পরপর ৪ বার দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করে সর্বশেষ পবিত্র মাহে রমাদানে কারাগার থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে ১৬ এপ্রিল ২০২৩ পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্ব মুহূর্তে আবারো তাঁকে একটি মিথ্যা মামলায় যুক্ত করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয় এবং গত ২৯ মে তিনি এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আবারো জামিনপ্রাপ্ত হন। এর মাধ্যমে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সকল মামলায় জামিন প্রাপ্ত হলেন। ১৩ জুন তাঁর জামিন নামা দাখিল করা হয়। ঠিক এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। সুতরাং কারা কর্তৃপক্ষ কোনো অবস্থাতেই তাঁকে আটক রাখতে পারেন না। জামিননামা দাখিল হওয়া মাত্র কারাকর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্ত করে দিবেন, এটাই স্বাভাবিক। অধিকন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত ১৭/৫/২০২২ তারিখে তাঁকে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের এই নির্দেশনা থাকার পর তাঁকে মুক্তি না দেয়া কিংবা গ্রেফতার বা হয়রানি করা সম্পূর্ণ আদালত অবমাননার শামিল।

এদিকে ১৩ জুন পল্টন মডেল থানার একটি পুরনো মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য বিজ্ঞ আদালত বরাবর আবেদন করেছে। এই মামলাটিতে তাঁকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়নি। গ্রেফতার দেখানো হবে কি না তা ১৯ জুন শুনানী হবে মর্মে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা মনে করে, যেহেতু অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের বিরুদ্ধে এখন কোনো মামলা নেই, সেহেতু তাঁকে আটক রাখা সম্পূর্ণ বেআইনী ও উচ্চ আদালতের নির্দেশের পরিপন্থী।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সকল হয়রানি ও বাড়াবাড়ি বন্ধ করে আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরীসহ আটক সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং আলেম-উলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।”